শোভাযাত্রার শাড়ি নিয়ে ঢাবির ছাত্রী হলে ছাত্রলীগের দুপক্ষে হাতাহাতি

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল  © ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। এতে অন্তত ৪ জন আহত হয়েছেন। আহতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। শুক্রবার (০৬ জানুয়ারি) রাতে ছাত্রলীগের শোভাযাত্রা শেষে হল প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নিলুফার পারভীন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে সমাধানের করার চেষ্টা করছেন।

আহতরা হলেন- কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক উপসম্পাদক ও হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রনক জাহান রাইন, প্রশিক্ষণ উপ সম্পাদক তানিয়া আক্তার তাপসী, ছাত্রলীগ কর্মী সুলতানা ও সাধারণ শিক্ষার্থী শাহিদা আক্তার। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্রী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বঙ্গমাতা হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বেনজীর হোসেন নিশির অনুসারীরা হল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। সাবেক সাধারণ সম্পাদক রনক জাহান রাইনের যে গ্রুপ ছিল, সেটি তানিয়া আক্তার তাপসী নিয়ন্ত্রণ করতেন। কিন্তু হল কমিটিতে জায়গা পাননি তাপসী।

আরও পড়ুন: মঞ্চ ভাঙার রেশ কাটিয়ে বণার্ঢ্য শোভাযাত্রা ছাত্রলীগের

‘‘পরে ঢাবি ছাত্রলীগের নতুন কমিটি হলে তাপসীর গ্রুপের কর্মীরা ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের গ্রুপে ভিড়ে যান। আজ শুক্রবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় তাপসী গ্রুপের কর্মীরা আলাদাভাবে আসায় চড়াও হন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কোহিনূর আক্তার রাখি ও সাধারণ সম্পাদক সানজিনা ইয়াসমিন। এ সময় কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়।’’
 
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই হলের একাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, কোহিনূর আক্তার রাখি ও সানজিনা ইয়াসমিনের নেতৃত্বেই মারধরের ঘটনা ঘটে। কোহিনূর আক্তার রাখি ও সানজিনা ইয়াসমিনের নেতৃত্ব এ ঘটনা ঘটে। 

হল ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী বলেন, শোভাযাত্রা উপলক্ষে তাপসী আলাদাভাবে নতুন শাড়ির কথা জানালে দিতে অস্বীকার করে হল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তাপসী বিষয়টি তানভীর হাসান সৈকতকে জানালে সৈকত শাড়ি পরিধান না করে সাধারণভাবে আসতে বলে। হলের সঙ্গে একত্রে মিছিল নিয়ে শোভাযাত্রায় উপস্থিত না হওয়া তাপসীকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পরে হলে গেলে কথা কাটাকাটি হয়। এর থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা বলেন, শাহিদা তার রুম থেকে খাবারের জন্য নিচে নামে কিন্তু সেখানে হাতাহাতির মাঝখানে পড়ে যাওয়ায় তাকে তাপসীর গ্রুপের কর্মী মনে করে মারধর করে। সে খুব আহত হয়, তাকে হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

আহত রনক জাহান রাইন বলেন, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এসেছেন। তারা বিষয়টি সমাধান করবেন, আমি আরকিছু বলতে চাচ্ছি না।

ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন জানান, আমরা দুপক্ষকে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করছি।

হাতাহাতি ও মারধরের নেতৃত্ব দেওয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি কোহিনূর আক্তার রাখি ও সাধারণ সম্পাদক সানজিনা ইয়াসমিনকে ফোন দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি। 

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, দুপক্ষের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা ছিল। হল প্রশাসন বিষয়টি দেখছেন। দুপক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে আছেন। আশা করছি সুষ্ঠু একটা সমাধান আসবে।


সর্বশেষ সংবাদ