দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যা, ঢাবি ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে যা জানা গেল

লিমন কুমার রায়
লিমন কুমার রায়  © ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছেন লিমন কুমার রায় (২০) নামে এক শিক্ষার্থী। আজ বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকালে হলের সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য নামে ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয়।

লিমন রয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর (ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ) এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের চার তলায় থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরে।

এই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় এখনো সঠিক কারণ জানাতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, তিনি কিভাবে ছাদ থেকে পড়ে গেছে তা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি বলে দাবি করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

তবে প্রাথমিকভাবে কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে সে সর্ম্পকে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও পড়াশোনা সংক্রান্ত চাপ থেকে হলের ছাদ গিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন অনেকেই। তারা বলছেন, ছাদে রেলিং ছিল, ভুলবশত পড়ার সম্ভাবনা কম।

দীপ্ত সেন নামে তার এক সহপাঠী জানান, এটা সুইসাইড কেস। সে ১০ তলা থেকে লাফ দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, লিমনের রুম ৪ তলায় হলেও ১০ তলার ছাদে  গিয়ে পড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক না। কারণ ছাদের রেলিং বেশ উচু এবং জুতা ছাদের  উপর খুলে রেখে রেলিং টপকে পড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা না। এটা আত্মহত্যা।

হলের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সুইসাইডও হতে পারে। আবার দুর্ঘটনাবশত পড়েও যেতে পারে। তবে সিসি টিভির ভিডিও ফুটেজে যদি দেখা যায় তাহলে হয়ত প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

আজিজুল হক নামে তার এক সহপাঠী বলেন, লিমনের একটি ইউটিউব চ্যানেল ছিল। সেখানে লিমন বিভিন্ন বিনোদনমূলক ভিডিও প্রচার করতেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও তার পরিচিত ছিল। কিন্তু গত তিন-চার মাস আগে তিনি সব ধরনের ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করা বন্ধ করে দেন। এমনকি তার ইউটিউব চ্যানেল‌ও বন্ধ করেন দেন।

ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী জানান, কি ঘটেছিল বের করার জন্য হল কতৃপক্ষ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়িত্ব দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক এবং মর্মান্তিক। 

হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, এ ঘটনায় আমরা খুব মর্মাহত। লিমনের বন্ধু এবং রুমমেটদের সাথে কথা বলার পর এমন কোন তথ্য পাননি যা থেকে বলতে পারি এটি আত্মহত্যা। তিনি আরও বলেন, হল থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং পুলিশ প্রশাসন ইতিমধ্যে তদন্ত করছেন ঘটনাটি।

তার রুমমেটদের উদৃতি দিয়ে ড. মিহির লাল সাহা বলেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে একে একে তার সব রুমমেট ক্লাসে চলে যান। আজকে লিমনের পরীক্ষা ছিল। শেষ যে রুমমেট ছিল তিনি লিমনকে জিজ্ঞাসা করেন কিরে পরীক্ষা দিতে যাবি না? উত্তরে লিমন বলেছিলেন যাবে। এ বলে সেই রুমমেট‌ও ক্লাসে চলে যান। পরে সকাল ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

হলের অ্যাথলেটিক্স বেয়ারা মানিক কুমার দাস বলেন, আমি হলের মাঠে কাজ করছিলাম। হঠাৎ শুনি যে কেউ একজন পড়ে গেছেন। প্রথমে মনে করেছি রুমের বেলকনি থেকে পড়ছে পরে জানতে পারি ছাদ থেকে পড়েছেন। পরে আমিসহ আরও কয়েকজন মিলে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়েছি। হাসপাতালে যাওয়ার সময় তিনি জীবিত ছিলেন বলে আমার মনে হয়েছে।

নিহত লিমনের চাচা ধনেশ্ববর চন্দ্র রায় বলেন, লিমনের বাবা কৃষক। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে লিমন সবার বড়। আমরা শুনেছি তিনি দুর্ঘটনায় ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছেন। ঠিক কি কারণে তিনি মারা গেছেন আমরা জানি না। তার মধ্যে হতাশা থাকতে পারে। আবার তিনি হতাশাগ্রস্ত অনেককেই বুঝাতেন। আমরা চাই লিমনের মৃত্যুর সঠিক কারণ বের হোক।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ বলেন, এ ঘটনায় সিআইডি এবং ডিবি তদন্ত করছে। আমরা ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার প্রাথমিক তথ্য নিয়েছি। ময়নাতদন্ত করা হবে, পরে আমরা বিস্তারিত জানতে পারবো।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence