ঢাবিতে ডিজঅ্যাবিলিটি ও টেকনোলজি বিষয়ে সেমিনার-কর্মশালা অনুষ্ঠিত

`ডিজঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড টেকনোলজি’ সেমিনার ও কর্মশালায় উপস্থিত অতিথি ও বক্তারা
`ডিজঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড টেকনোলজি’ সেমিনার ও কর্মশালায় উপস্থিত অতিথি ও বক্তারা   © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে `ডিজঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড টেকনোলজি’ শীর্ষক একটি বিশেষ সেমিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে সঙ্গতি রেখে কীভাবে নিজেকে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করা যায় সে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ধারণা দেয়া হয় অনুষ্ঠানে। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগ। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় সকল শ্রেণির মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। তাই যাদের ভাষিক সীমাবদ্ধতা আছে তাদের যোগাযোগ সক্ষমতা উন্নত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগ বদ্ধপরিকর। প্রযুক্তি ব্যবহারেরর মাধ্যমে যোগাযোগ অক্ষম মানুষদের কীভাবে সাহায্য করা যায় সে বিষয়ে তিনি দিকনির্দেশনা প্রকাশ করেন। 

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং এআইএমএস ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. খন্দকার আ. মামুন। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিসমূহ আয়ত্ত্ব ও ব্যবহারের মাধ্যমে বর্ধনশীল এবং বিকল্প যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ভাষিক যোগাযোগে অপারগতা আছে এমন ব্যক্তিদের যোগাযোগ সক্ষমতা ত্বরান্বিত করে। অধিকাংশ বর্ধনশীল এবং বিকল্প যোগাযোগ মাধ্যমগুলো যেমন- স্পিচ জেনারেটিং ডিভাইস বা চিত্র-বিনিময় যোগাযোগ মাধ্যম অথবা এই সম্পর্কিত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় উন্নত দেশগুলোতে বেশি সহজলভ্য বা ব্যবহৃত। 

তিনি আরও বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে, বর্ধনশীল এবং বিকল্প যোগাযোগ মাধ্যমগুলো চিত্র-বিনিময় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভিত্তিক মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন থেকে পরিবর্তিত হচ্ছে। এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং এবং অগমেন্টেড রিয়েলিটি ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনে অবাচনিক শিশু এবং তাদের অভিভাবক ও স্পিচ থেরাপিস্টদের উল্লেখযোগ্যভাবে সহযোগিতা করবে। বাংলাদেশেও এগুলোর ব্যবহার শুরু হয়েছে। ‘বলতে চাই’ ও ‘বলতে চাই প্লাস’ নামক দুইটি অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহার শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন অধ্যাপক মামুন। এ দুটি অ্যাপস অবাচনিক শিশু এবং তাদের অভিভাবক ও স্পিচ থেরাপিস্টদের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক একটি শিখন প্লাটফর্ম। 

আরও পড়ুন: টিকটককে টেক্কা, শর্ট ভিডিও থেকে আয়ের সুযোগ দিচ্ছে ইউটিউব।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সম্মানিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সরদার এ. নাঈম। তিনি বলেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা কোনোভাবেই সমাজের জন্য বোঝা হতে পারে না। বরং তারা আশীর্বাদ হয়ে আমাদের মাঝে এসেছেন। 

সভাপতির বক্তব্যে কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের চেয়ারপারসন তাওহিদা জাহান বলেন, ২১ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য। যে সমস্ত মানুষের যোগাযোগে অক্ষমতা রয়েছে তাদের সেবা ও চাহিদা পূরণে কীভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার আরও ত্বরান্বিত করা যায় তার জন্য কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগ কাজ করে যাবে। 

কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শারমিন আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অভিভাবক প্রতিনিধি ও ডাউন সিনড্রোম সোসাইটি অব বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান সরদার এ. রাজ্জাক, কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোনিয়া ইসলাম নিশা। 

উল্লেখ্য, ডাউন সিনড্রোম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন দুইজন শিশুর নৃত্য পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। 

আরও পড়ুন: জুমার দিনের বিশেষ আমল ও ফজিলত


সর্বশেষ সংবাদ