চলছে শেষ দিন, ঈদুল আজহাকে ঘিরে চুল-দাড়ি কেটেছেন তো?

চুল কাটার দৃশ্য
চুল কাটার দৃশ্য  © সংগৃহীত

ঈদুল আজহা আর মাত্র ক’দিনের অপেক্ষা। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে জমজমাট শহরের বাজার, শপিং মল ও পার্লারগুলো। পশু কোরবানির ঈদ হলেও ব্যক্তি পরিচ্ছন্নতা ও পরিপাটি থাকার বিষয়টি কেউই যেন ভুলে যাননি। বিশেষ করে চুল-দাড়ি কাটার বিষয়টি ঈদের আনন্দের অংশ হিসেবেই দেখছেন অনেকেই।

জিলহজ মাস শুরু হওয়ার আগে নখ, চুল, গোঁফ এবং বগল ও নাভির নিচের পশম ইত্যাদি পরিষ্কার করে ফেলা উত্তম। কেননা, জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর যারা কোরবানি দেওয়ার নিয়ত করেছেন, তাদের জন্য এসব কাটা থেকে বিরত থাকা সুন্নত ও মোস্তাহাব হিসেবে গণ্য হয়।

বিশ্বনবি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর হাদিস অনুযায়ী, জিলহজ মাসের প্রথম দশদিনের মধ্যে কোরবানির নিয়ত করা ব্যক্তি চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকবেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি কোরবানি দিতে চায়, সে যেন জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর থেকে কোরবানি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তার চুল ও নখ না কাটে।”— (সহীহ মুসলিম: ৪৯৫৯; আবু দাউদ: ২৭৮২)

কারা এ নিয়মে পড়বেন?
বিশেষজ্ঞ আলেমরা জানান, কেবল সেই ব্যক্তি, যিনি নিজে কোরবানি দিচ্ছেন বা যার পক্ষ থেকে কোরবানি হচ্ছে—এই নিয়ম তার জন্য প্রযোজ্য। পরিবারে অন্য কেউ যদি কোরবানি না দেন, তবে তার চুল-নখ কাটায় কোনো বাধা নেই।

কবে থেকে এই নিয়ম মানতে হবে?
এই নিষেধাজ্ঞা শুরু হয় ১ জিলহজ থেকে, অর্থাৎ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদের ১০ দিন আগে থেকে। এটি চলবে কোরবানি দেয়ার আগ পর্যন্ত। অর্থাৎ, পশু জবাইয়ের পর আবার চুল-নখ কাটতে কোনো বাধা নেই।

ইসলামি দৃষ্টিকোণে এর তাৎপর্য
ইসলামিক গবেষকগণ বলেন, এই আমল কোরবানির অনুভূতির গভীরতাকে প্রতিফলিত করে। যেহেতু হজরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাই এই সময়কালটি আত্মসংযম, আত্মত্যাগ ও ইবাদতের বিশেষ সময় হিসেবে গণ্য করা হয়।

কোরবানি শুধু একটি পশু জবাই নয়, বরং এটি আত্মত্যাগ, সংযম ও আল্লাহর নির্দেশের প্রতি আনুগত্যের প্রতীক। চুল ও নখ না কাটা এই শিক্ষা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের একটি প্রতীকী চর্চা, যা আমাদেরকে কোরবানির প্রকৃত তাৎপর্য স্মরণ করিয়ে দেয়।


সর্বশেষ সংবাদ