চুন ছাড়া সহজে ভুঁড়ি পরিষ্কার করবেন যেভাবে

চুন ছাড়া সহজে ভুঁড়ি পরিষ্কার করবেন যেভাবে
চুন ছাড়া সহজে ভুঁড়ি পরিষ্কার করবেন যেভাবে  © সংগৃহীত

গরুর-খাসির ভুঁড়ি খেতে কে না পছন্দ করেন। ভোজনরসিক বাঙালির কাছে অন্যতম প্রিয় খাবার ভুঁড়ি বা বট। তেল মসলাযুক্ত এই পদটির চাহিদা গরু বা খাসির মাংস থেকে কোনো অংশে কম নয়। বিজ্ঞানীদের মতে, গরু-খাসির ভুঁড়ি পরিমিত খেলে শারীরে মেলে অনেক পুষ্টিগুণ। এতে থাকে আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, নিয়াসিন, কোলিন, জিংকসহ সেলেনিয়াম।

খেতে মজা হলেও বিপত্তি বাধে ভুঁড়ি পরিষ্কার করতে গিয়ে। বিশেষত কোরবানির ঈদে গরু বা খাসির এই অংশটিকে নিয়ে পড়তে হয় ঝামেলায়। কারণ ভুঁড়ি পরিষ্কার করা বেশ জটিল ও কষ্টের কাজ। অনেকেই ভুঁড়ি থেকে দ্রুত নোংরা স্তর পরিষ্কার করতে চুনের সাহায্য নেন। এতে ময়লা তাড়াতাড়ি চলে গেলেও, নষ্ট হয়ে যায় স্বাদ। ফলে আসল মজা আর মেলে না। 

চাইলে চুন ছাড়াই ভুঁড়ি পরিষ্কার করতে পারেন। কীভাবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক সহজ দুটি পদ্ধতি সম্পর্কে।

পদ্ধতি ১
ভুঁড়ি ছোট ছোট টুকরায় কেটে নিন। একটি হাঁড়িতে পানি গরম করুন। একটি একটি করে টুকরা আলাদা করে ধুয়ে ঘষে পরিষ্কার করুন। পানি ফুটে উঠলে অল্প পানি আলাদা একটি পাত্রে নিন। তাতে ভুঁড়ির কালো পাশ চুবান। ১২ থেকে ১৩ সেকেন্ড রেখেই তুলে ফেলুন।

এবার একটি চামচের সাহায্যে ভুঁড়ির এক কোণা ধরুন। অন্য একটি চামচের সাহায্যে আঁচড়ে কালো ময়লা তুলে নিন। ভুঁড়ির খাঁজকাটা অংশ কয়েক সেকেন্ড বেশি ভেজাবেন গরম পানিতে। চামচের বদলে স্টিলের গ্লাস বা ছুরি দিয়েও ময়লা ওঠাতে পারেন ময়লা। তবে গরম পানিতে ১৩-১৭ সেকেন্ডের বেশি ভুঁড়ি রাখবেন না। এতে ময়লা নরম হওয়ার বদলে উল্টো আটকে যায়।

কালো ময়লা পরিষ্কার পর ভুঁড়ির টুকরোগুলো পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। অবশ্যই একটা একটা টুকরা নিয়ে ধোবেন। সুন্দর মতো ধোয়া শেষে ভুঁড়ি সেদ্ধ করে নিন। একটি হাঁড়িতে এমনভাবে পানি নিন যেন তাতে ভুঁড়ি ডুবে থাকে। পানিতে ১ থেকে দেড় চামচ হলুদ মেশান। ভুঁড়ি দিয়ে চুলার আঁচ বাড়িয়ে সেদ্ধ করে নিন।

পদ্ধতি ২
এই পদ্ধতিতে ভুঁড়ি পরিষ্কার করতে প্রথমে ভুঁড়ি কয়েকটি বড় টুকরা করে নিন। পানি গরম করে তাতে টুকরা চুবান। গরম থাকা অবস্থান হাতে গ্লাভস পরে চামচ দিয়ে ঘষে ময়লা উঠিয়ে ফেলুন। প্রাথমিকভাবে পরিষ্কার করা হলে আবার পানি গরম করুন। এতে ১ চামচ হলুদের গুঁড়া দিন। কেটে রাখা ভুঁড়ির টুকরা তাতে দিয়ে দিন। বলক ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ভুঁড়ির তেল ও ময়লা ভেসে উঠবে। একটি ঝাঁঝরিতে ভুঁড়ি উঠিয়ে পানি ঝরিয়ে ফেলুন। গরম অবস্থায় চামচ দিয়ে চেঁছে বাকি ময়লা উঠিয়ে ফেলুন। বিশেষ করে চর্বির অংশে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে হবে ভালো করে। পেছনে থাকা পাতলা আবরণ তুলে ফেলুন। ব্যস, ভুঁড়ি পরিষ্কার হয়ে যাবে। পছন্দের পদ্ধতিতে ভুঁড়ি পরিষ্কার করে সেদ্ধ করে ফেলুন। 

আরও পড়ুন: কোরবানির গোশত ফ্রিজে সংরক্ষণ করবেন যেভাবে

ভুঁড়ির পুষ্টিগুণ
ভুঁড়িতে আছে ৪টি পুষ্টি উপাদান যেমন- জিঙ্ক,  সেলেনিয়াম, আয়রন ও ক্যালসিয়াম। এর প্রত্যেকটিই আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ১০০ গ্রাম ভুঁড়িতে থাকে ৪ গ্রাম ফ্যাট ও ১৫৭ মি.গ্রাম কোলেস্টেরল।

ভুঁড়ি খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
একজন হার্টের রোগী দিনে ২০০ মি.গ্রাম কোলেস্টেরল খেতে পারেন এবং একজন সুস্থ মানুষ দিনে ৩০০ মি.গ্রাম কোলেস্টেরল খেতে পারেন। আপনি যদি ১০০ গ্রাম ভুঁড়ি খান তাহলে কোলেস্টেরল গ্রহণের নিরাপদ মাত্রার অর্ধেক পূরণ হয়ে যাবে। এই পরিমাণ একজন হার্টের রোগীর দিনে কোলেস্টেরল গ্রহনের নিরাপদ মাত্রার ৭৯% পূরণ করবে। এছাড়াও ভুঁড়িতে আছে দুই ধরনের ক্ষতিকর ফ্যাট- স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাট। তাই চিকিৎসকের নিষেধ থাকলে ভুঁড়ি এড়িয়ে চলাই উত্তম।

 

সর্বশেষ সংবাদ