খাবার খাওয়ার পরে চা পান ভালো নাকি খারাপ? জেনে নিন

ভরা পেটে চা না খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা
ভরা পেটে চা না খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা  © সংগৃহীত

চা প্রেমীদের কাছে মন খারাপে, আনন্দে, পারিবারিক মিলনে, বন্ধুদের আড্ডায় চা না হলে অপরিপূর্ণ থাকে পুরো আয়োজন। চায়ের চাইতে প্রিয় পানীয় আর কিছুই হতে পারে না। যদিও কেউ কেউ অভ্যাসের কারণেই দুপুর কিংবা রাতের খাবারের পর চা পান করে থাকেন। এটি ছাড়া অনেকের মনে হয় যেন খাবার অসম্পূর্ণ আছে। 

তবে এ বিষয়টি কি স্বাস্থ্যসম্মত? গবেষকরা বলছেন, একেবারেই নয়। রাতের বা দুপুরের যে সময়েরই হোক না কেন, ভারি খাবার খাওয়ার পর চা পান করা ক্ষতিকর। উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণের ঠিক পরপরই চা পান করা উচিত নয়। এতে হজমে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণের ঠিক পরপরই চা পান করলে তা খাবার বিপাক প্রক্রিয়া ও হজমে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। আর হজমের সমস্যা হওয়া মানেই শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হওয়া। এতে একসময় শরীর অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভুগতে থাকে। এ বিষয়ে ইঁদুরের ওপর গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক দেখেছেন, প্রোটিনজাতীয় খাবারের সঙ্গে চা গ্রহণ করলে খাদ্য হজমের প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় এবং তা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে।

তবে এ সমস্যা শুধু দুপুরের খাবার কিংবা রাতের খাবার গ্রহণ করলেই হবে সেটি নয়, অন্যান্য সময়ও যদি উচ্চ প্রোটিনযুক্ত নাশতা খান, যেমন মাংসের কাবাব কিংবা মাংস দিয়ে তৈরি এমন কিছু খাওয়ার ঠিক আগে কিংবা ঠিক পরেই চা পান করলে একই ধরনের বিপত্তি হবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, চা পান হজমের জন্য ভালো। তবে কিছু চায়ে থাকা ক্যাফিন বিভিন্ন পুষ্টির শোষণে বাধা দেয়। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট দ্য হেলথ সাইটের বরাত এবার তাহলে খাবার খাওয়ার পর চা পানের প্রভাব নিয়ে জেনে নেয়া যাক।

পরিপাক স্বাস্থ্যে চায়ের ভূমিকা কিছু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, খাবারের সময় বা পরে চা পান করলে পেটের গ্যাস এবং পেট ফাঁপার মতো সমস্যা উপশম করে হজমে সহায়তা করে। তবে মনে রাখা উচিত যে, সব ধরনের চা হজমের ওপর উপকারী প্রভাব ফেলে না। গ্রিন টি এবং আদা চায়ের মতো ভেষজ চা হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করার জন্য সেরা। এতে উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল রয়েছে।

আরও পড়ুন: সকালে খালি পেটে ভুলেও খাবেন না যেসব খাবার

চা পরিপাকতন্ত্রকে অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে সহায়তা করে লালা, পিত্ত এবং গ্যাস্ট্রিক রসের উৎপাদনকে উত্তেজিত করে ভালো হজমের জন্য। এতে অ্যান্টিঅক্সিডন্ট রয়েছে, যা শক্তিশালী অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং এসব উপাদান কিছু হজম জটিলতা কমায়। আর গ্রিন টি এবং ভেষজ চায়ে ক্যাটেরিন নামক পলিফেনলিক যৌগ থাকে। যা হজমকারী এনজাইমের কার্যকলাপ বাড়ায়, পেপসিন পা পাকস্থলীতে খাদ্যের প্রোটিন ভাঙতে সাহায্য করে।

এদিকে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে চায়ে উপস্থিত ফেনোলিক যৌগগুলো পাকস্থলীর অন্ত্রের আস্তরণে আয়রন-কমপ্লেক্স তৈরি করে আয়রনের শোষণে হস্তক্ষেপ করে। আয়রন শোষণে এর প্রভাব কমাতে খাবারের সঙ্গে চা পান করলে আয়রন ও ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এ জন্য খাবারের সঙ্গে চা পান করা আয়রনের ঘাটতি রোগীদের জন্য ভালো নয়। কারণ চায়ে বিদ্যমান ট্যানিন শরীরে আয়রন শোষণের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে।

খাবারের অন্তত এক ঘণ্টা পর চা পান করুন। এছাড়া এক ঘণ্টা আগেও চা পান করবেন না। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে প্রোটিন বা আমিষযুক্ত খাবারের সঙ্গে চা পানের কারণে তেমন কোনো সমস্যা দেখা না দিলেও নীরব অপুষ্টি তাদের ক্রমান্বয়ে গ্রাস করতে থাকে। তাদের শরীর প্রয়োজনীয় মিনারেল থেকে বঞ্চিত হতে থাকে। একপর্যায়ে মিনারেলের ঘাটতি এবং অপুষ্টিজনিত কারণে বিভিন্ন রকমের শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence