বেতন ছাড়াই ৮ মাস, অধিদপ্তরের গেটে তালা দিল শিক্ষকরা

আন্দোলনরত শিক্ষকরা
আন্দোলনরত শিক্ষকরা  © টিডিসি ফটো

যোগদানের আট মাস পেরিয়ে গেলেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় এখনো বেতন পাচ্ছেন না কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা। তাই এমপিওভুক্তির দাবিতে অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অধিদপ্তেরের কার্যালয় তালা মেরে রেখছেন শিক্ষকরা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনো সেখানেই অবস্থান করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।

বুধবার বেলা ১২টার দিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক অধিদপ্তরের মূল গেটের সামনে অবস্থান করছেন। সেখানে দ্রুত সময়ের মধ্যে এমপিওভুক্তির দাবিতে নানা স্লোগান দিচ্ছেন তারা। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা শিক্ষকদের নানা আশ্বাস দিলেও তারা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। 

আন্দোলনরত শিক্ষকরা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তারা সুপারিশপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। যোগদানের পর ফেব্রুয়ারি মাসেই এমপিও ফাইল সাবমিট করেন। তবে দীর্ঘ আট মাস অতিবাহিত হলেও এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। ফলে নিজ বাড়ি থেকে ৪০০/৫০০ কিলোমিটার দূরের প্রতিষ্ঠানে যোগদান করে বেতন ছাড়াই চাকরি করতে হচ্ছে তাদের। এতে চরম মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে এই শিক্ষকদের।

আরও পড়ুন: নভেম্বরের শুরুতে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল

শিক্ষকরা বলেন, এমপিওভুক্তির দাবিতে এর আগেও একাধিকবার অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন তারা। মহাপরিচালক বারবার তাদের একমাসের মধ্যে এমপিও হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে তার সেই আশ্বাস এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বেতন না হওয়ায় অনেক শিক্ষক ধারদেনা করে চলছে। আমরা আমাদের সন্তানদের চোখের দিকে তাকাতে পারছি না। আমাদের সাথে সাধারণ ও মাদ্রাসার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যারা সুপারিশ পেয়েছিলেন তাদের এমপিও হয়েছে। অথচ আমাদের মাত্র ৮০০টি ফাইল আট মাসেও এমপিওভুক্ত করতে পারেনি কারিগরি অধিদপ্তর।

মো. নুরুল ইসলাম নামে এক শিক্ষক জানান, ডিজিটাল যুগে এনালগ পদ্ধতিতে কাজ করে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন এই অধিদপ্তরের কারণেই বাস্তবায়ন হচ্ছে না। দুই এমপিও সভার মাধ্যমে মাত্র ১২০ জন শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করেছে অধিদপ্তর। তাহলে বাকিদের এমপিওভুক্ত হতে কত বছর সময় লাগবে সেটি কে জানে। 

তিনি আরও বলেন, বেতন ছাড়া নিজের জেলা ছেড়ে আরেক জেলায় চাকরি করার যন্ত্রণা কতটা সেটা বলে বোঝানোর মত না। শিক্ষকদের সাথে এমন চরম বৈষম্যমূলক আচরণ কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চলতি সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই শর্ত ছাড়া কারিগরি অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানে সুপারিশপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষকদের এসব বিষয়ে জানতে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক  ড. মো. ওমর ফারুককে কল দেওয়া হলে তিনি সভায় আছেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


সর্বশেষ সংবাদ