সনদ বাণিজ্যের মামলায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের শামসুজ্জামানের জামিন

সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ টি এম শামসুজ্জামান
সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ টি এম শামসুজ্জামান  © ফাইল ফটো

অর্থের বিনিময়ে ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগে করা মামলার প্রধান আসামি ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ টি এম শামসুজ্জামানকে জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আখতারুজ্জামান তাকে জামিন দেন। 

ঢাকার আদালতের প্রসিকিউশন দপ্তরের মিরপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জালাল উদ্দিন জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

গত ১ এপ্রিল শামসুজ্জামান গ্রেপ্তার হন। এরপর থেকে তিনি কারাগারে। এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দিও দেন শামসুজ্জামান। গ্রেপ্তার হওয়ার পর চাকরি থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। 

এর আগে গত ১৪ মে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী শেহেলা পারভীনকে ঢাকার চিপ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামিন দেন। গত ২০ এপ্রিল শেহেলা পারভীনকে আটক করা হয়। 

কারিগরি বোর্ডের সনদ বাণিজ্যে মামলার প্রধান আসামি এ টি এম শামসুজ্জামানের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সোহেলা পারভিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। 

এর আগে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের একাধিক দল ১ এপ্রিল ভোররাত থেকে নজরদারিতে রেখে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিরপুরের দক্ষিণ ও মধ্য পীরেরবাগ এবং আগারগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান এবং তার সহযোগী ফয়সাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।

এ সময় কাছাকাছি দুটি বাসায় তাদের হেফাজত থেকে একাধিক কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রিন্টার, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে চুরি করে নেওয়া হাজার হাজার অরিজিনাল সার্টিফিকেট এবং মার্কশিটের ব্লাঙ্ক কপি, তৈরি করা শতাধিক সনদ এবং ট্রান্সক্রিপ্ট, বায়োডাটা ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল উদ্ধার করা হয়। 

এসব কম্পিউটার প্রিন্টার ল্যাপটপ দিয়ে গত কয়েক বছরে পাঁচ হাজারের বেশি আসল সনদ, মার্কশিট বানিয়ে ভুয়া লোকদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। নকল সার্টিফিকেটও ওয়েবসাইটে দেখা যেত। এ ছাড়া সরকারি ওয়েবসাইটে, সরকারি পাসওয়ার্ড, অথোরাইজেশন ব্যবহার করে ভুয়া লোকদের কাছে বিক্রি করা সনদগুলোকে বাংলাদেশ সরকারের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। 

ফলে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর যেকোনো দেশে বসে এই ওয়েবসাইটে গিয়ে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বরগুলোকে সার্চ করলে সার্টিফিকেটগুলো সঠিক বলে প্রমাণিত হবে। 

এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশ বাদী হয়ে ১ এপ্রিল মিরপুর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে। এই মামলায় এ পর্যন্ত পাঁচজন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবার মধ্যে দিয়েছেন। 

এই মামলায় সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামানের সহযোগী সাবেক কর্মচারী ও শামসুজ্জামানের সনদ তৈরির নিজস্ব কারখানায় নিয়োজিত কম্পিউটারম্যান ফয়সাল হোসেন, গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার ওরফে কলি, হিলফুল ফুজুল নামের কারিগরি প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল সরদার গোলাম মোস্তফা ও যাত্রাবাড়ীর ঢাকা পলিটেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মাকসুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ