তিন শিক্ষককে জড়িয়ে ঢাবি সাদা দলের বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:২৯ PM , আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৩ PM

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সাদা দলের পক্ষ থেকে পাঠানো ‘৩ জন শিক্ষকের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার সিদ্ধান্ত ঢাবি সাদা দলের’ শীর্ষক প্রেস বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটির আরেকটি অংশ। তারা বলছে, এ ধরনের ঘটনা ইতিহাসে নজিরবিহীন।
এই তিনজন শিক্ষক হলেন- সাদা দলের এই অংশের আহ্বায়ক ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম-আহবায়ক ও তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মেজবাহ-উল-ইসলাম এবং যুগ্ম-আহবায়ক ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আল মোজাদ্দেদী আলফেছানী।
আজ বুধবার বিকেলে ‘প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনর্গঠিত সাদা দলের প্রতিবাদ ও স্পষ্ট বিবৃতি’ শীর্ষক এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতির নামে ব্যক্তিস্বার্থে সংগঠনকে ব্যবহার করাসহ নানাবিধ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে কিছু শিক্ষক ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসের রাজনীতিতে নিজেদের নেতৃত্বকে অপ্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন। এছাড়াও, ছুটিতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত এসব শিক্ষকবৃন্দের সাথে বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তাদের উপর অর্পিত রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব অবহেলা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন যা সুস্পষ্ট তদন্তের দাবি রাখে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সাদা দল কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রার্ডকৃত সংগঠন কিংবা কোনো প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের হাতে শিকলবন্দি দল নয়। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সাদা দলের সাথে প্রকাশ্যে ‘সম্পর্ক না রাখা’, ‘সাদা দলের পরিচয় দিতে পারবে না’, ‘কেউ যুক্ত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ’-এমন বক্তব্য প্রদান এবং হুমকি ফ্যাসিস্ট মনোভাব ও প্রতিক্রিয়াশীল চরিত্রের বহি:প্রকাশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নামধারী এই চক্র তিনজন শিক্ষকের নাম-ছবিসহ যে বিবৃতি ছেপেছেন তা ইতিহাসে নজিরবিহীন হয়ে থাকবে।
‘‘এই তিনজন সম্মানিত শিক্ষকের সামাজিক মর্যাদা নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, এমনকি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র মিডিয়া সেলকে সম্পূর্ণ ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেনি। কে কার সাথে সম্পর্ক রাখবে-কি রাখবে না, সাধারণ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এই চক্রের এ ধরনের হুমকি প্রচারের পূর্বে গণমাধ্যমের যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল। একইসঙ্গে আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্ট প্রচার মাধ্যম সেচ্ছায় এইগুলো প্রত্যাহার করে নিবেন। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয়তাবাদী শক্তির উপর প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের আক্রমণ তীব্র হতে তীব্রতর হচ্ছে। বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের এই আক্রমণ এবং হুমকি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সার্বভৌমত্বের উপর চরম আঘাত বলে আমরা বিশ্বাস করি। তথাকথিত এই সাদা দলের নামধারী ব্যক্তিদের থেকে সতর্ক থাকতে আমরা সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই।’’
এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সাদা দল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাবি সাদা দলের সভায় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার ক্রমধারায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সাদা দল’ নামে একটিই সংগঠন আছে। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে একই নামে সংগঠনের যে ৩ জন নিজেদের আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন, তাদের সঙ্গে সাদা দলের কোনো ধরনের সম্পর্ক থাকবে না।
‘‘সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে এই তিনজন শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। তাই এই তিনজন শিক্ষকের সঙ্গে ঢাবি সাদা দলের হয়ে কোনো ধরনের সম্পর্ক না রাখার জন্য সভায় সকলকে পরামর্শ প্রদান করা হয়। দলের এ সিদ্ধান্তের উপেক্ষা করে তাদের সাথে কেউ যুক্ত হলে তাদের ব্যাপারেও পরবর্তীতে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’