‘মেডিকেলে চান্স না পেলেও সমস্যা নেই’ বাবার এমন উক্তিই ছিল তার অনুপ্রেরণা

মো. মেজবাউল ইসলাম
মো. মেজবাউল ইসলাম  © টিডিসি ফটো

রাজশাহীর ছেলে মো. মেজবাউল ইসলাম। ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিলো একজন মানবিক ডাক্তার হওয়ার। অবশেষে মেজবাউলের সে স্বপ্ন পূরণের রাস্তা খুলে গেছে। দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেলে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধাতালিকায় ৮ম স্থান অর্জন করেছেন তিনি। এখন তার ইচ্ছা, তিনি নিজেকে একজন সিভিল সার্জন হিসেবে গড়ে তুলবেন।

বাবা মো. জামাল উদ্দিন ও মা মোরশেদা বেগমের সাথে রাজশাহীতেই বেড়ে ওঠা মেজবাউলের। বাবা জামাল উদ্দিনের অনুপ্রেরণায় ভর্তি প্রস্তুতি অনেকটাই সহজ হয়েছে তার। মেজবাউল হাজী মো. মুহসীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক শেষ করে ভর্তি হন সৈয়দ এ এইচ এম কামারুজ্জামান ডিগ্রি কলেজে।

এমবিবিএস ভর্তি প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অনেক আগে থেকে একই রুটিন মেনে চলেছি। ভর্তি পরীক্ষার সময়ও আমি সেভাবেই পড়ালেখা করেছি। ভোরে উঠে ফজর নামাজ পড়ে কোরআন পড়তাম, তারপর থেকে ভর্তি প্রস্তুতির পড়ালেখা শুরু করতাম।

‘‘এই পড়ার মাঝে কিছুক্ষণ বিরতিও নেওয়া হতো। এরপর কোচিং বা প্রাইভেটে যেতাম। জোহরের নামাজ শেষে একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার পড়া শুরু করতাম। এভাবে রাত দশটার মধ্যে আমি বিছানায় চলে যেতাম।’’

পড়ার সময় কোন বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন? এমন প্রশ্নে মেজবাউল বলেন, আমি পড়ার ক্ষেত্রে সবার আগে মূল বিষয়গুলো ধারণা নিয়েছি। অনেক কিছু আছে যেগুলো আসলে মুখস্থ ছাড়া হয় না। এছাড়াও বিষয়ভিত্তিক পড়ার জন্য আমি কিছু টিপস ফলো করতাম।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে জানান, তার একজন সিভিল সার্জন হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। তিনি বলেন, আমার বাবা-মা কখনো চাপ দেয়নি যে আমাকে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে হবে বা সেরা কিছু করতে হবে। আমার পরীক্ষার আগে বাবা বলেছিলেন ‘চান্স না পেলেও সমস্যা নেই অনেক পথই খোলা আছে’।

নিজের ভর্তি প্রস্তুতির কৌশল জানিয়ে মেজবাউল বলেন, যদি নম্বর কম পেতাম, তখন দেখতাম আমার ভেতরে দুর্বলতা কোথায় আছে। তখন সে জায়গাগুলো বের করে সেগুলোর প্রতি মনোযোগ দিতাম। যেন পরবর্তীতে এমন কম নম্বর না পাই।

এ ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ধৈর্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দেখা যায়, অনেকে প্রস্তুতির সঙ্কটময় সময়ে ধৈর্য হারিয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। তবে নিজের ভর্তি প্রস্তুতিতে এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হননি মেজবাউল। তার মতে, অতিরিক্ত চাপ থাকলেই কেবল এমনটা হতে পারে।

তিনি বলেন, আমি মেডিকেলে চান্স না পেলে ডেন্টাল বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার দেওয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা করেছিলাম।

ছেলের এমন সাফল্যে খুশি বাবা মো. জামাল উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি তো ওর কাছে এতটাও আশা করিনি। অনুভূতি প্রকাশ করার মত নয়। আমি সবার কাছে দোয়া চাচ্ছি, আল্লাহর ইচ্ছায় আমার ছেলে যেন একজন ভালো ডাক্তার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারেন। আমি চেয়েছিলাম ও বুয়েটে পড়ুক, তবে তার মেডিকেলের প্রতি আগ্রহ দেখে আর কিছু বলিনি।


সর্বশেষ সংবাদ