ছাত্রদলের দুই নেতাকে পিটিয়ে ড্রেনে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ মে ২০২২, ১২:৪৬ PM , আপডেট: ২৪ মে ২০২২, ০১:০২ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্রদলের ওপর হামলা ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলায় ছাত্রদলের প্রায় ৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে ও আহতদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে দাবি করেছে ছাত্রদল। মঙ্গলবার (২৩ মে) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় এ সংঘর্ষের শুরু হয়।
এদিকে এদিন বেলা ১১টার দিকে ছাত্রদলের দুই নেতাকে মারধরের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের গেটের পাশে অবস্থিত ড্রেনে ফেলে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্রদলের অভিযোগ, এ হামলায় শহীদুল্লাহ হলের একাধিক ছাত্রলীগ কর্মী অংশ নেয়।
তাদেরকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় ঢামেকে নেওয়া হয়েছে। ড্রেনে ফেলা দেওয়া দুই ছাত্রদল নেতা হলেন- বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এজিএস ছাত্রদল নেতা আল আমিন বাবলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সহ-সভাপতি মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্রদলের দুই নেতাকে ড্রেনে ফেলে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী বেধড়ক মারধর করছেন। এ সময় তাদেরকে বলতে শোনা যায়, ছাত্রদল করিস, এত বড় সাহস! পরে ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক তুহিন রেজা, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের নেতা সৈয়দ শরিফুল আলম শফুর হস্তক্ষেপে তাদেরকে ড্রেন থেকে তোলা হয়েছে। এরপর আবারও কয়েক দফা তাদেরকে মারধর করে রিকশায় তুলা হয়। রিকশায় উঠানোর পর আবারও লাথি মেরে ফেলে দেওয়া হয়। এ সময় তাদের পা ভেঙে যাওয়ায় রিকশায় উঠতে না পারলে তাকে ছাত্রলীগের দুইজন কর্মী তাদেরকে রিকশায় তুলে দেন।
ছাত্রদল নেতা মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানান, দোয়েল চত্বর মিছিল দিয়ে আসছিল। পরে শহীদুল্লাহ হলের কর্মীরা টেনে ভেতরে নিয়ে মারধর শুরু করে। লাঠি-হকিস্টিক দিয়ে মারধর করে তারা। এর পাশাপাশি তারা চাপাতি দিয়ে কোপ দেয়। আমার পা পুরোপুরি ভেঙে গেছে।
এর আগে, ছাত্রলীগের এ হামলায় আহত হয়েছেন ছাত্রদলের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মানসূরা আলম। শহীদ মিনার এলাকায় হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। সেখান থেকে অন্য নেতাকর্মীরা তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। হাতে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন তিনি। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান জানান, প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। যেই বক্তব্যকে ভিত্তি করে এই অভিযোগ সে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে সংবাদ সম্মেলন করার জন্য করতে ছাত্রদল ঢাকা মেডিক্যালের ইমার্জেন্সি গেইট থেকে ক্যাম্পাসের দিকে আসছিলো। শহীদ মিনারে সামনে এলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রামধা, ক্রিজ, হকি স্টিক, রড নিয়ে ছাত্রদলের ওপর অতর্কিত হামলা করেন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন- ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, ঢাবি শাখার যুগ্ম-আহবায়ক এজাজুল কবির জুয়েল, জগন্নাথ হলের সাবেক আহ্বায়ক ও ঢাবি শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজীব মজুমদারসহ ৪০ জন নেতাকর্মী আহত হন বলে দাবি করেন এ নেতা। আহতরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে তিনি জানান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহীদ মিনার, টিএসসির সড়ক দ্বীপ, টিএসসির প্রবেশ পথ, মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অবস্থান করছেন। শহীদুল্লাহ হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দিচ্ছে। ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রদল মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারের সামনে এলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা শুরু করে। এরপর শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, চলে ইট পাটকেল ছোড়াছুড়ি। একপর্যায়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষ থেমে যায়।
এ ব্যাপারে ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন জানান, ছাত্রদল সংগঠনটি রাজাকারদের ডিস্ট্রিবিউটর, সন্ত্রাসের ডিস্ট্রিবিউটর। তারা সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীর মাঝে ভীতি ছড়াচ্ছে ও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম থাকবে কিনা সেই আশংকা করছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক ও সুষ্ঠু পরিবেশের স্বার্থে ওদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে।