শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করার দাবি শিবিরের

ছাত্রশিবির আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন
ছাত্রশিবির আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন  © টিডিসি ফটো

শিক্ষাবিদ, গবেষক, আলেম-ওলামা এবং বিশেষজ্ঞ নীতি নির্ধারক নিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাধীন শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করার দাবি জানিয়েছে ইসলামি ছাত্রশিবির। আজ রবিবার (২৬ জানুয়ারি) শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে এ দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, কমিশনে শিক্ষাক্রম ও কাঠামোর আধুনিকীকরণ, শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি প্রক্রিয়া, শিক্ষা বাজেট এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে শিক্ষা কমিশন কাজ করবে। শিক্ষার মৌলিক পরিবর্তন, একটি গবেষণা ও উদ্ভাবনমুখী পরিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষা খাত দীর্ঘমেয়াদী উন্নতির দিকে ধাবিত হবে। সেই সাথে এই কমিশন শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কাররের ক্ষেত্রে দেশের মানুষের মনস্তত্ব, সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে বৈষম্যহীন ও কল্যাণমুখী সমাজ ব্যবস্থা প্রণয়নের লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালা প্রণয়ন করবে। 

সভাপতি আরও বলেন, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলদেশ পেয়েছি, সেই সকল শহীদ পরিবারের দায়িত্ব গ্রহণ, আহতদের চিকিৎসা ও স্বীকৃতি প্রদানের জন্য সরকার বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আমরা আশাবাদী। একটি বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতির বাংলদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা রাখার উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। 

লিখিত বক্তব্যে জাহিদুল ইসলাম বলেন, অভ্যুত্থানের ৫ মাস পার হলেও স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। চলিশের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরা যে বর্বর হামলা চালিয়েছিল, তাতে হাজারো প্রাণ ঝরে গেছে, যা ইতিহাসে নজিরবিহীন। রংপুরের শহীদ আবু সাঈদ, রাজশাহীর আবু রায়হান, চট্টগ্রামের শহীদ ওয়াসিম, ঢাকার শহীদ মুগ্ধসহ সহস্রাধিক ছাত্রজনতাকে শহীদ করা হয়েছে। এই গণহত্যায় রাষ্ট্রের সকল শক্তি প্রয়োগ করে ছাত্র জনতার ওপর নিপীড়ন চালানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের কারণে জাতি চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং এখনও তারা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু দেশের জনগণ তাদের আর বরদাশত করবে না। আমরা দাবি করছি চব্বিশে যারা এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত, অতিদ্রুত তাদের বিচারের রূপরেখা প্রণয়ন করে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়মীলীগ দোসরদের চাকিরচ্যুত করে বিচার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এছাড়া দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো অনেকাংশে ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। প্রশাসনে দায়িত্ব পালনরত হাসিনার দোসরদের দ্রুত সময়ে অব্যহতি প্রদান করে দেশের সামগ্রিক আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক করতে সরকারকে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি বিগত ১৫ বছরে দায়েরকৃত সকল রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা প্রত্যাহার ও রাজবন্দীদের মুক্তি প্রদান করতে হবে।

ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, গত ৫ আগস্টে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত প্রকাশের অবারিত সুযোগ তৈরি হয়েছে। সেই সাথে প্রায় বিগত ত্রিশ বছরের নিষ্ক্রিয় ছাত্রসংসদগুলো কার্যকর করার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদমুক্ত রাজনীতির সংস্কারের নতুন এক গতিধারা বিনির্মানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ছাত্রসংসদ নির্বাচন না হওয়ার কারনে ক্যাম্পাসে গণতন্ত্রহীনতার চর্চা, মত প্রকাশে বাধা ও ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের অবাধ গণতন্ত্র ও মুক্তবুদ্ধির চর্চার বিকাশ ঘটানোর জন্য ক্যাম্পাসসমূহে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।  


সর্বশেষ সংবাদ