ইউল্যাবের বিওটি ভেঙে ভিসির পদত্যাগ দাবি ছাত্রফ্রন্টের

ইউল্যাব ও ছাত্রফ্রন্টের লোগো
ইউল্যাব ও ছাত্রফ্রন্টের লোগো  © ফাইল ছবি

ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) ভিসি ও এক শিক্ষকের পদত্যাগসহ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনের অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসজুড়ে আঁকা গ্রাফিতি মুছে ফেলতে বলা এবং দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় এ দাবি জানানো হয়েছে। মুক্ত মত ও গণতান্ত্রিক চর্চার পথ উম্মুক্ত করে শিক্ষার্থীবান্ধব নয়— এমন নীতিমালা বিলুপ্ত করার আহবানও জানিয়েছে সংগঠনটি।

শাখার সংগঠক নাবিন আবতাহি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ’র শিক্ষার্থীরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনের অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসজুড়ে গ্রাফিতি আঁকে। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দুইজন শিক্ষার্থীকে গত ২৯ ডিসেম্বর ইউল্যাব প্রশাসন কর্তৃক ‘গ্রাফিতি অঙ্কনকে’ অপরাধ হিসেবে গণ্য করে প্রতিষ্ঠানের কোড অব কন্ডাক্টের Clause-4 অনুযায়ী প্রবেশনের আওতায় আনা হয়েছে। 

এর আগে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের আঁকা গ্রাফিতিগুলো মুছে ফেলার আল্টিমেটাম দেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।  মূলত প্রশাসনের ওই নির্দেশনাকেই স্বৈরাচারী পদক্ষেপ ও অগণতান্ত্রিক দাবি করে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ইউল্যাবের শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভিসি প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের নিষিদ্ধের ইঙ্গিত দেন। যার ফলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মতপ্রকাশের অধিকার, গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস ও ভিসির পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবিতে কর্মসূচি পালন করে। বুধবার (১ জানুয়ারি) ইউল্যাবের আরেকজন ফ্যাকাল্টি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের টেরোরিস্ট আখ্যা দেন। এতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়। অভিযুক্ত ভিসি ও ফ্যাকাল্টির পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান রয়েছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন, এখনো অনেক শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থীদের উপর হয়রানি ও ভয় দেখিয়ে দমন-পীড়ন করেছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ’র ভিসি সহ ট্রাস্টি বোর্ডের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে– জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দমন-পীড়ন, মুক্ত মত প্রকাশে বাঁধা দেওয়ার। 

এতে আরো বলা হয়েছে, বর্তমান ভিসি ও ট্রাস্টি বোর্ড জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিকে মুছে দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধ্বংস করে দেওয়ার অপচেষ্টা করছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমত প্রকাশ ও গণতান্ত্রিক চর্চাকে হরণ করছে। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। দ্রুত ইউল্যাবের ট্রাস্টি বোর্ড ভেঙে দিতে হবে এবং ভিসি ও অভিযুক্ত ফ্যাকাল্টির পদত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্তমত ও গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য উন্মুক্ত করে শিক্ষার্থীবান্ধব নয় এমন নীতিমালা বিলুপ্ত করতে হবে।

অন্য যে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো প্রশাসনের দমন-পীড়ন, মত প্রকাশে বাঁধা এবং অগণতান্ত্রিক নীতিমালা রয়েছে– তার বিরুদ্ধে ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ লড়াই গড়ে তোলার আহবান জানান তারা।


সর্বশেষ সংবাদ