ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রকাশ্যে আসলেন ঢাবি শিবির সভাপতি

সাদিক কায়েম
সাদিক কায়েম  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের পর সম্প্রতি ক্যাম্পাসে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। ছাত্ররাজনীতি নিয়ে এমন সিদ্ধান্তের পর বিভিন্ন মহল থেকে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। এমন সময় প্রকাশ্যে এলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি।

আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এক ফেসবুকে পোস্টে তিনি ছাত্ররাজনীতি নিয়ে মত প্রকাশ করেছেন। ওই পোস্টে তিনি নিজেকে ছাত্রশিবিরের সভাপতি হিসেবে দাবি করেছেন। তার নাম সাদিক কায়েম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তিনি।

কায়েমের ওই পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

ফ্যাসিস্ট শোষণ শুধু ছাত্ররাজনীতি নয়, রাজনীতির সংজ্ঞাই পালটে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদে কোন রাজনীতি থাকে না। বিরাজনীতি ফ্যাসিবাদের ভাষা। ফ্যাসিবাদ ছাড়া সকল বাদ, ইজম ও রাজনীতি ফ্যাসিবাদে অনুপস্থিত থাকে। ফ্যাসিবাদে কোন রাজনীতি নাই, শুধু ফ্যাসিবাদই আছে। টেন্ডারবাজি, গুম, খুন, ক্রসফায়ার, ফাঁসি, ধর্ষণ, রাহাজানি, দুর্নীতি এসব রাজনীতি না। এগুলি ফ্যাসিবাদ।

আওয়ামী ফ্যাসিবাদের গত ষোল বছরের ভয়ংকর দিনগুলো কিংবা তারও পূর্বের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো রাজনীতির প্রতি তীব্র ঘৃণা সৃষ্টি করেছিলো তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। কিন্তু চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সমস্ত ভুল ভেঙে দিয়েছে। রাজনীতি সম্পর্কে তৈরি হয়েছে নতুন সচেতনতা। দেয়ালে দেয়ালে লেখা হচ্ছে, “এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’’।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কোনো প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্ত নয়: শিবির সভাপতি

আমরা জানি এই স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছে রাজনৈতিক দল সংশ্লিষ্ট এবং দলের আওতামুক্ত রাজনীতি সচেতন ছাত্র-জনতা। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটানোর চেয়ে বড় রাজনীতি আর কোন রাজনীতিই না। আমরা চাই সেই রাজনীতির আদর্শে ছাত্ররাজনীতির ব্যাপক ইতিবাচক সংস্কার হবে। ভবিষ্যতের ছাত্ররাজনীতিতে মত-দ্বিমত হবে, যুক্তির পাথরে সবাই বিক্ষিপ্ত হবে, কিন্তু কোন হকিস্টিক কিংবা স্ট্যাম্প থাকবে না। কোনো গেস্টরুম, গণরুম থাকবে না। চব্বিশের আকাঙ্ক্ষাকে বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে এই ছাত্ররাজনীতি। মধুতে ভিন্নমতের কেউ চা খেলে অপর পক্ষের কেউ তেড়ে আসবে না। একাডেমিক পরিবেশে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে ছাত্রসংসদ ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি। 

গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্নমতের প্রতি থাকবে সম্মান কিন্তু কেউ যেন স্বৈরাচারী না হয়ে উঠতে পারে সে ব্যাপারে রাখতে হবে সজাগ ও পূর্ণ দৃষ্টি। এই রাজনৈতিক সংস্কারে অবশ্যই চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে, তা না হলে ভেস্তে যাবে আমাদের এই স্বাধীনতা। আমরা চাই ছাত্ররাজনীতির সংস্কার গবেষণা, পলিসি ডায়ালগের মধ্য দিয়ে তা বাস্তবায়িত হোক। এ লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।


সর্বশেষ সংবাদ