ফেসবুকে সরব থাকলেও রাজপথে নীরব ঢাবি ছাত্রলীগ, শাহবাগ আন্দোলনকারীদের দখলে

ছাত্রলীগের লোগো
ছাত্রলীগের লোগো   © ফাইল ছবি

ফেসবুকসহ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজপথে সরব থাকার কথা জানিয়ে পোস্ট করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রায় সকল নেতাকর্মী। আগের ভিডিও, ছবি পোস্টসহ ভয় ভীতি প্রদর্শন করে নানা পোস্ট দিতে দেখা গেছে গতকাল রাতে। তবে রোববার (৪ আগস্ট) সকাল হতেই যেন রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, শাহবাগ থেকে উধাও ছাত্রলীগ। নেই আর কোনো নতুন ফেসবুক পোস্টও।

গতকাল শনিবার (৩ আগস্ট) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত তার ফেসবুক পেইজে পোস্ট করেন, বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে, এই মাটির কোটি সন্তান নির্দ্বিধায় নিজের জীবন দিয়ে দিতে পারে। শেখ হাসিনার প্রশ্নে, শেখ মুজিবের প্রশ্নে আর স্বাধীনতার প্রশ্নে কোন আপস হয় না।

তিনি আরও লিখেন, শেখ হাসিনা এই দেশের মানুষকে অনেক দিয়েছেন। যারা দেখেনি তাদের বাদই দিলাম কিন্তু যারা দেখেছেন তারা বলেন, বুকে হাত রেখে বলেন, কোন বাংলাদেশকে দেখেছেন আপনারা সেখান থেকে আজ বাংলাদেশ কোথায়? শেখ মুজিবের রক্তের লড়াইয়ে সারা বাংলাদেশের ছাত্রলীগ কর্মীরা প্রস্তুত।

আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘দেখা হবে শাহবাগ, দেশ ও শেখ হাসিনার পক্ষে।’ 

এছাড়াও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি একটি আগের ভিডিও পোস্ট করে বলেন গভীর রাতে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তৎক্ষণাৎ সরেজমিনে দেখা যায়, টিএসসি থেকে শাহবাগ পর্যন্ত পুরোটাই ছিল ফাঁকা। এছাড়াও একাধিক নেতাকর্মীদের দেখা যায় ‘সবার খেলা যেখানে শেষ শেখের বেটির খেলা সেখানে শুরু’ এমন পোস্ট দিতে।

কিন্তু সকাল হতেই সব যেন থেমে গিয়েছে। সকাল ১০ টা থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাহবাগ দখল নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, রিপোর্ট লেখা অবধি সময়ে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় লাখো জনতার ভিড়। নেই কোনো পুলিশি বাধা। ছাত্রলীগের ও কোনো দেখা পাওয়া যায়নি। সকাল থেকে এখন অবধি লাখো মানুষ নিয়ে রাজপথ দখলে রেখেছে আন্দোলনকারীরা। তবে শাহবাগ ব্যতীত দেশের বিভিন্ন জেলায় ও রাজধানীর মিরপুর ও উত্তরা এলাকায় ছাত্রলীগের গুলি করার খবর পাওয়া গেছে।

ঢাবি ছাত্রলীগ কেন মাঠে নেই জানতে চাইলে ঢাবি ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আমরা যে যার যার মত আছি। গতকালের ঘটনাটি আমাদের পরিকল্পিত ছিল।

আরও পড়ুন: আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানোর রিট খারিজ

এদিকে সকালে আন্দোলনকারীদের একাংশ বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের অভ্যন্তরে গাড়িত্ব আগুন দিলে সাধারণ মানুষ সেটিকে ভালোভাবে নেয়নি। সমন্বয়কদের অভিযোগ এটি ছাত্রলীগের ইন্ধনে করা হয়েছে। সতর্ক করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম 

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গতকাল থেকে উসকানি দিয়েছে। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যার প্রচার প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে। দেশকে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আবারও পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলনকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে দেশ রক্ষা করতে হবে। জনজীবনের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনা রক্ষা করার দায়িত্ব ছাত্র-নাগরিকদের। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিতে হবে৷ আপনারা ১ দফা দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যান। যেখানে হামলা হবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। বিজয়ের মাধ্যমেই আন্দোলনের সমাপ্তি হবে। সবাই নেমে আসুন।


সর্বশেষ সংবাদ