অধ্যাপক ইমতিয়াজকে অব্যাহতি দেওয়া অগণতান্ত্রিক: ছাত্র ফ্রন্ট
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৩, ০৪:০৬ PM , আপডেট: ০৩ মে ২০২৩, ০৪:১৩ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদকে সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টিকে জনবিরোধী ও ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার পরিপূরক মনে করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।
বুধবার (৩ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের দপ্তর সম্পাদক আতিকুর রহমান সায়েম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অফিস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ রচিত ‘Historicizing 1971 Genocide: State versus Person (2009)’ শীর্ষক গ্রন্থে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগের বিষয় উদঘাটনের জন্য গঠিত কমিটির সুপারিশ উত্থাপন করা হয়। সভা মনে করে, গ্রন্থে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে পরিবেশিত কতিপয় তথ্য অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও ইতিহাসের বিকৃতি।
এ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ধরনের একাডেমিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বাতিল হবে না: আইনমন্ত্রী
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক ও সাধারণ সম্পাদক আরাফাত সাদ প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমানে আমরা এমন একটা সময়ে বাস করছি যেখানে কর্তৃত্ববাদী মতের বাইরে গিয়ে কোনও কিছু বলা ও লেখা যায় না। অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের বিষয়টি এর আরও একটি প্রমাণ। তিনি তাঁর বইয়ে ‘Historicizing 1971 Genocide: State versus Person (2009)’ এমন কিছু কথা লিখেছেন যা কর্তৃত্ববাদীদের পছন্দ হয়নি। আর সেই কারণে তাকে সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, যারা বাকস্বাধীনতার কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা তোলে, তারাই আবার অধ্যাপক ইমতিয়াজের মতো ব্যক্তিদের বাকস্বাধীনতায় বাধার সৃষ্টি করে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এক সময় মানুষের স্বাধীনতা আদায়ে সোচ্চার ছিলেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু স্বার্থান্বেষী শিক্ষক এখন মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে বেশ পটু। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ, গবেষণার জন্য প্রয়োজন যথাযথ পরিবেশ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই ধরনের কর্তৃত্বপরায়ণ সিদ্ধান্ত শিক্ষকদের মধ্যে চাকরি হারানোর ভয় তৈরি করে, যা গবেষণার পরিবেশের পরিপন্থী।
আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিটি মানুষের যেকোনও বিষয়ে মতামত দেওয়ার অধিকার আছে। যদি কারও মতামত কেউ পছন্দ না করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে পাল্টা মতামত দিয়ে এর প্রতিবাদ করতে পারে। সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া সম্পূর্ণরূপে অগণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণীত এবং জনবিরোধী ও ফ্যাসিবাদি শাসন প্রতিষ্ঠার পরিপূরক।