জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসনে ছাত্র ফ্রন্টের ৬ দফা

  © সংগৃহীত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সংকট নিরসনে ৬ দফা দাবি জানিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। আজ সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশ থেকে এ দাবি উত্থাপন করেন ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা।

উত্থাপিত ছয় দফা দাবিগুলো হলো- স্বতন্ত্র পরীক্ষা হল, ক্লাসরুম নির্মাণ এবং পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ করে ২১০ দিন ক্লাস চালু করা। তিন মাসের মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা; শিক্ষা-গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো। লাইব্রেরি-সেমিনারে নতুন সিলেবাসের পর্যাপ্ত বই, ল্যাবরেটরি, গবেষণাগার, মিলনায়তন, হেলথ সেন্টার ও ব্যায়ামাগার স্থাপন করা। আবাসন সংকট নিরসনে সব প্রতিষ্ঠানে নতুন হল নির্মাণ এবং প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে সিট বণ্টন করা। সব হলে ডাইনিং সিস্টেম চালু করা এবং সরকারি ভর্তুকি নিশ্চিত করা, খাবারের মান বাড়ানো। শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা, সর্বোচ্চ বেতন-ভাতা, নিরাপত্তা ও সময়োপযোগী উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা। সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বেই ভর্তি কার্যক্রম বাতিল করে শিক্ষার্থী হয়রানি বন্ধ করা। সরকারি-বেসরকারি সব কলেজে বছর বছর ফি বাড়ানো চলবে না এবং অভ্যন্তরীণ আয়ের নামে নতুন ফি আরোপ করা চলবে না। সন্ত্রাস-দখলদারিত্বমুক্ত শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা। সব কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া।

পরে স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্দেশ্যে মিছিল সহকারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের দিকে র‌ওনা করেন তারা। ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈর সভাপতিত্বে  ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটিরসহ সভাপতি রায়হান উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব কান্তি, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সুলতানা আক্তার, দপ্তর সম্পাদক অনিক কুমার দাস, ছাত্র ফ্রন্টের বিভিন্ন জেলা কলেজ ও সরকারি কলেজ শাখার নেতারা।

সমাবেশে মুক্তা বাড়ৈ বলেন, নীতিমালায় লেখা আছে বছরে ২১০ দিন ক্লাস নিতে হবে। এখন কলেজগুলো সপ্তাহে দুদিন বন্ধ ঘোষণা করেছে, স্বতন্ত্র পরীক্ষাকেন্দ্র না থাকায় সব শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে নিতেই বছর কেটে যায়। ক্লাস আর নেওয়া হয় না। আজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় বাজেটের যত বরাদ্দ দেওয়া হয় তা দিয়ে শিক্ষক ও কর্মচারীর বেতন‌ও মিটে না। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দফায় দফায় বেতন নিয়ে চালানো হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ১৯৯২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন মুখ থুবড়ে পড়ে তখন তড়িগড়ি করে কোনো রকম পরিকল্পনা ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটা বোর্ড গঠন করে। সেই থেকে আমাদের আন্দোলন চলছিল। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর আন্দোলনের এক পর্যায়ে ২০০১ সালে তৎকালীন সরকার প্রত্যেক কলেজে স্বতন্ত্র পরীক্ষা হল নিমার্ণ করার ঘোষণা দেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সব কলেজে স্বতন্ত্র পরীক্ষা হল নির্মাণ ও তার যথাযথ কার্যক্রম শুরু হয়নি।
 
তিনি বলেন, আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের দখলে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিয়মিত তাদের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এ সময় তিনি আফগানিস্তানে তালেবানের দ্বারা নারীদের বিশ্ববিদ্যালেয় যাওয়া নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানান ও এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান।


সর্বশেষ সংবাদ