প্রভাব বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব

যবিপ্রবিতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, সাংবাদিকের উপর হামলা

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (১৬ অক্টোবর) যবিপ্রবির শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সালের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে

এ সময় ঘটনার সংবাদ সংগ্রহকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সদস্য শিহাব উদ্দিন সরকারকে মারধর করে তার মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগকর্মীরা। শিহাবকে মারধরে অংশগ্রহণ করেছে ছাত্রলীগকর্মী পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান রহমান রাব্বি, রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের জুবায়ের, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের বাহার, একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের নুর আলম, চতুর্থ বর্ষের সৌমিক, তৃতীয় বর্ষের আশিকুজ্জামান লিমন, দ্বিতীয় বর্ষের আমিনুল ইসলাম, স্নাতকোত্তরের উত্তম, ফাইনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের বেলাল হোসেন সহ অর্ধশতাধিক ছাত্রলীগকর্মী। আহত শিহাবকে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭ ঘটিকার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কদম তলায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সালের ২জন অনুসরী অস্ত্র দিয়ে সভাপতি সোহেল রানার অনুসারীদের ধাওয়া করে। এরপর কদমতলা থেকে তানভীর ফয়সালের অনুসরীরা শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে এসে অবস্থান নেয়। পরবর্তীতে রাত সাড়ে ৮ ঘটিকায় সভাপতি সোহেল রানার নেতৃত্ব তার অনুসারীরা হলে প্রবেশ করলে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয় এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এ ঘটনা ঘটে। এতে দুই গ্রুপের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

আরও পড়ুন: বৈধ ছাত্রকে বের করা নিয়ে ছাত্রলীগের কোন্দলে উত্তপ্ত শাবি

সাংবাদিককে মারধর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে যবিপ্রবির প্রক্টর ড.  হাসান আল ইমরান বলেন, আমি হলের ভিতর সাংবাদিকের উপর আক্রমণের বিষয়টি জানতে পেরেছি। হল প্রভোস্ট ইতিমধ্যে মিটিং করে হলের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আমি আহত সাংবাদিককে দেখেছি ও চিকিৎসার জন্য তাকে এ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাকে মারাত্মকভাবে আহত করা হয়েছে যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ঘটনা। গত চার বছরে যবিপ্রবিতে এমন আক্রমণাত্মক ঘটনা ঘটেনি, সেখানে সাংবাদিকদের  উপরে হামলা ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ঘটনায় জড়িতদের আমারা অতিদ্রুত  দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনব বলে আশ্বাস দেন তিনি।

এ বিষয়ে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মো. আশরাফুজ্জামান জাহিদ জানান,  অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে হলে তল্লাশি করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে এসে মারামারি থামিয়ে দেই। এরইমধ্যে প্রভোস্ট বডি ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিক সমিতির সাথে মিটিং করা হয়েছে।

এ বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের কর্মীদের অন্তর্কোন্দলে সংগঠিত এ ঘটনা এবং দায়িত্বরত সাংবাদিকের উপর হামলার বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। ক্যাম্পাসে কোনো অস্ত্রের রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। খুব দ্রুতই কমিটি গঠন করা হবে এবং দোষীদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর হামলায় আহত হওয়া সাংবাদিককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বপ্রকার সহায়তা করা হবে বলে জানান তিনি। 


সর্বশেষ সংবাদ