আদালত পাড়ায় বাবাকে ধরে অঝোরে কাঁদলেন কানেতা

হাবিবুল ইসলাম হাবিব
হাবিবুল ইসলাম হাবিব  © টিডিসি ফটো

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার কলারোয়ায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়েরকৃত দু’টি মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ কারাবন্দী রয়েছেন বিএনপির ৩৯ জন নেতাকর্মী। রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মলের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আদালতে তোলা হয় হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৯ জনকে।

এসময় আদালত-পাড়ায় দেখা হয় বিনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবের মেয়ে ও ছাত্রদল নেতা কানেতা ইয়া লাম লামের। দীর্ঘদিন পর বাবা মেয়ের দেখা হওয়ার পর এ সময় আদালত-পাড়ায় তৈরি হয় আবেগ-ঘন পরিবেশ। তারা একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এ বিষয়ে কানেতা ইয়া লাম লাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, সরকার বিচারব্যবস্থাকে ম্যানুপুলেট করেছে। এ মামলাটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মামলায় কোন সত্যতা নেই উল্লেখ্য করে কানেতা জানান, আদালতের রায়ের পর আমরা কোর্ট থেকে জামিন নিয়েছি, কিন্তু তা আটকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা  আদালতে আপিল করবো।

এর আগে এদিন সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এ অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়েরকৃত দু’টি মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. আজহারুল ইসলাম। এসময় আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন বিনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৯ জন আসামি।

সাতক্ষীরা আদালতের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ জানান, এ পর্যন্ত আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ১১ জন সাক্ষী। আগামী ১৭ অক্টোবর এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছে আদালত।

আসামি পক্ষের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশানের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদিন জানান, ২টি মামলা একই সাক্ষীতে চলতে পারে না। তিনি দাবি করেন, হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে এই মামলায় ষড়যন্ত্রমূলক-ভাবে জড়ানো হয়েছে। 

আরও পড়ুন: ডেনমার্কে উচ্চশিক্ষা শেষে চাকরি ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকাল ১০টায় এক নির্যাতিত নারীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা কলারোয়ায় দলীয় অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা চালায়। আওয়ামী লীগের এক ডজন নেতা-কর্মী আহত হন হামলায়।

এঘটনায় করা হামলা মামলায় সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তালা-কলারোয়ার বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জন নেতা-কর্মীকে চার থেকে ১০ বছর মেয়াদে সাজা প্রদান করেন। আর অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের অপর দুটি মামলায় চার্জ গঠন করা হয় গত ১৪ জুন।

প্রসঙ্গত, বিনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবের বিরুদ্ধে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়েরকৃত দু’টি মামলাসহ চলমান রয়েছে মোট ১৮টি মামলা।


সর্বশেষ সংবাদ