যুব এশিয়া কাপ

ফাইনালে ভারতকে গুঁড়িয়ে দিতে চায় বাংলাদেশ, রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের অপেক্ষা

যুব এশিয়া কাপের শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারতের যুবারা
যুব এশিয়া কাপের শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারতের যুবারা  © প্রতীকী ছবি

সিনিয়ররা কখনও এশিয়া কাপ জিততে পারেননি, ইতোমধ্যে জুনিয়র টাইগাররা তা পেরেছেন। সর্বশেষ আসরে  প্রথমবার যুব এশিয়া কাপের শিরোপা উৎসবে মাতেন তারা। টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। আগামীকাল রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় দুবাইয়ে যুব এশিয়া কাপের শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারতের যুবারা। ফাইনালে ভারতকে গুঁড়িয়ে দিতে চান ইয়াং টাইগাররা।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দুটি সেমি-ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কা ও ভারত। পাকিস্তানকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় শিরোপা থেকে আর মাত্র একটি ম্যাচের দূরত্বে যুব টাইগাররা। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় এবং সবমিলিয়ে তৃতীয়বার লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ভারতীয় যুবারা, তারাও বাংলাদেশের সমান ৭ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। কাকতালীয়ভাবে দুই দলই চলতি আসরের গ্রুপপর্বে রানারআপ হয়েছিল। অর্থাৎ, তিনটি করে ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা বিদায় নিয়েছে যুব এশিয়া কাপ থেকে।

যুব এশিয়া কাপের সর্বশেষ আসরে ভারতকে হারিয়েই ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। দুবাইয়ে আইসিসি একাডেমি গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের যুবাদের কাছে সেবার ভারত হেরেছিল ৪ উইকেটে। এবার আর সেমিতে নয়। দুই দল আগামীকাল মুখোমুখি হবে ফাইনালে।

ভারতের বিপক্ষে ফাইনালের সুখস্মৃতিও আছে বাংলাদেশের যুবাদের। দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে প্রথমবার যুব বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল আকবর আলীর বাংলাদেশ। প্রতি মুহূর্তে উত্তেজনা ছুঁয়ে গিয়েছিল রুদ্ধশ্বাস সেই ম্যাচে। ম্যাচশেষে তা গড়িয়েছিল হাতাহাতিতেও। ওই বাংলাদেশ দলের শরিফুল ইসলাম-মাহমুদুল হাসান জয়রা এখন খেলছেন জাতীয় দলে। ভারতীয় দলের যশস্বী জয়সওয়াল-তিলক ভার্মারাও এখন জাতীয় দলের হয়ে আলো ছড়াচ্ছেন। বিশ্বকাপের চেয়ে মঞ্চ ছোট হলেও শরিফুল-জয়সওয়ালদের উত্তরসূরিরা এবার মুখোমুখি হচ্ছেন আরেকটি ফাইনালে। ভারতের জন্য এবারের লড়াইটাকে প্রতিশোধের মঞ্চ বলা যায়। অন্যদিকে বাংলাদেশের জন্য তা শিরোপা ধরে রাখার লড়াই। তাতে স্নায়ুর বড় পরীক্ষাই দিতে হবে দুই দলের ক্রিকেটারদের।
 
সর্বশেষ এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে ভারতকে ধসিয়ে দিয়েছিলেন মারুফ মৃধা। ১০ ওভারে ৪১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। দলের ভরসা হয়ে এই বাঁহাতি পেসার এবারও আছেন। সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে তার শিকার দুই উইকেট। গতবারের মতো এবারও তার সঙ্গী ইকবাল হোসেন ইমন। এই ডানহাতি পেসার ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচ ছিলেন উইকেটশূন্য। তবে গতকাল পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলাই করেছেন ইকবাল। ৭ ওভারে ২৪ রান দিয়ে নিয়েছেন চার উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কারের জন্য তাই খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি বিচারকদের। 

পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচশেষে ইকবাল বলছিলেন, ‘আজকের (গতকাল) উইকেটটা আসলে ভালো ছিল। উইকেট পেসারদের সহায়ক ছিল। আমি জায়গায় বোলিং করে সফল হয়েছি। ম্যাচসেরা হতে পেরে অনেক ভালো লাগছে, খুশি হয়েছি। আমার পারফরম্যান্সটা দলের জন্য অনেক দরকার ছিল।’ ফাইনালের পরিকল্পনা নিয়ে স্বাভাবিকভাবে রহস্য রেখে দিয়েছেন ইকবাল, ‘আমি আমার জায়গা থেকে ভালো বোলিংয়ের চেষ্টা করব। খুব বেশি কিছু (ভাবনায় নেই)।’ 

ব্যাটিংয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ অবশ্য তাকিয়ে থাকবে অধিনায়ক আজিজুল হাকিমের দিকে। ৪ ম্যাচে ২২৪ রান নিয়ে আসরের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের তালিকায় তার অবস্থান তিনে। গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে ছোট লক্ষ্য তাড়ায় দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর তার অপরাজিত ৬১ রানের ইনিংসেই ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। পরিকল্পনা সফল হওয়ার তৃপ্তি তাই আজিজুলের কণ্ঠে, ‘দলের প্রতি বার্তাই ছিল যে আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোব। আমরা পরিকল্পনা যা করে মাঠে নেমেছিলাম সেটা হচ্ছে, যে ভুলগুলো আগে করেছি, তা কমাব। সেটা আমরা করতে পেরেছি।’ ফাইনালে দলের জন্য সমর্থনও চেয়েছেন আজিজুল, ‘ফাইনালে আমরা আমাদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করব। আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করব।’ প্রতিপক্ষ যখন ভারত, তখন রুদ্ধশ্বাস আরেকটি লড়াইয়ের অপেক্ষায় তো থাকাই যায়!


সর্বশেষ সংবাদ