ক্রিকেটে এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই শুরু আগামীকাল

এশিয়া কাপের চলতি আসর শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে আঞ্চলিক পরাশক্তিগুলো
এশিয়া কাপের চলতি আসর শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে আঞ্চলিক পরাশক্তিগুলো  © ফাইল ফটো

আগামী ওয়ানডে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজেদের প্রস্তুতিতে দৃস্টি রেখে  আগামীকাল থেকে মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট এশিয়া কাপের ১৬তম আসর শুরু করতে যাচ্ছে অংশগ্রহণকারী দলগুলো। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে মুলতানে নেপালের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে আয়োজক দু’টি দেশ। টুর্নামেন্টের ৪টি ম্যাচ পাকিস্তানে এবং ৯টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে শ্রীলংকায়।

মূলত এবারের এশিয়া কাপের আয়োজক ছিল পাকিস্তান। কিন্তু পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাধ্য হয়ে যৌথভাবে ইভেন্টটি আয়োজনে করছে দুই দেশ। ১৯৮৪ সালে শুরু হওয়া  টুর্নামেন্টের প্রত্যেক আসরেই  অংশ নেয়া একমাত্র দল শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপে একবার করে অংশ নেয়নি ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ দল।    

অতীত রেকর্ড বলছে, টুর্নামেন্টে সবচেয়ে সফল দল ভারত। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সাতবার শিরোপা জিতেছে টিম ইন্ডিয়া। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছয়বার শিরোপার স্বাদ নেয় শ্রীলঙ্কা। মাত্র দু’বার ট্রফি ঘরে তুলে পাকিস্তান। বেশ কিছু দিন যাবত  ওয়ানডে ফরম্যাটে সেরা দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া  বাংলাদেশ তিনবার ফাইনালে উঠলেও শিরোপা জিততে পারেনি।

এ বছরের শেষ দিকে ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপ মাথায় রেখে এবারের এশিয়া কাপ ৫০ ওভারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০১৬ সাল থেকে বিশ্বকাপের ফরম্যাট হিসেবে এশিয়া কাপ আয়োজনের সিদ্বান্ত নেয় আয়োজকরা। এজন্য ২০১৬ এবং ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বছরে এশিয়া কাপ সংক্ষিপ্ত  ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। বিশ্বকাপের জন্য দলগুলোকে সেরা প্রস্তুতির মঞ্চ তৈরি করে দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সর্বশেষ ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত  আসরের  চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। তাই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা এবং ওয়ানডে ফরম্যাটে এশিয়া কাপে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। এশিয়া কাপে প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছে নেপাল।  একমাত্র  নেপাল ছাড়া বাকি পাঁচ দলই  আগামী বিশ্বকাপে খেলবে।

এজন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে ভুলত্রুটি শুধরে  নিতে  এবারের টুর্নামেন্টটি সব দলের  জন্যই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
শিরোপা জয়ের প্রশ্নে ফেবারিট হিসেবে কাগজে কলমে সবচেয়ে শক্তিশালী দল ভারত। অবশ্য দেরিতে  হলেও বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে অন্তত ওয়ানডে ফরম্যাটে যেকোনো দলের বিপক্ষে যেকোনো কন্ডিশনে জিততে পারে তারা।

বিশ্বকাপ নিশ্চিতে শ্রীলংকাকে বাছাইপর্ব খেলতে হয়েছে। তবে দলটির এশিয়া কাপের রেকর্ড নিশ্চিতে। এছাড়া এবারের টুর্নামেন্টে তারা নিজ মাঠে খেলবে। যে কারণে দলটির মোকাবেলা করা যে কোন দলের জন্যই কঠিন হবে। যদিও ইনজুরি এবং কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে মূল খেলোয়াড়দের অনেকেই লংকান দলের হয়ে এবার খেলতে পারছেন না।

এদিকে আবার ঐতিহাসিকভাবে এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে খুব একটা সফল দল বলা যাবে না। আবার ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ হিসেবে পরিচিতি থাকায় তাদেরকে আলোচনার বাইরেও রাখা যাবে না। তাছাড়া বাবর আজমের অসাধারণ নেতৃত্ব গুণের কারণে বিশ্ব-ক্রিকেটে বেশ উজ্জীবিত হয়ে ধারাবাহিক পারফর্মেন্স করে যাচ্ছে পাকিস্তান।

ওয়ানডে ফর্মেটের ক্রিকেটে আফগানিস্তানের ধারবাহিকতায় ঘাটতি আছে। তবে নিজেদের দিনে বিশ্বের যে কোনো দলকে হারানোর যোগ্যতা রয়েছে তাদের। আফগানদের ব্যাটিংয়ে গভীরতার ঘাটতি রয়েছে। তবে রশিদ খানের নেতৃত্বে বিশ্বমানের স্পিনারদের নিয়ে ওই ঘাটতি পূরণ করার দক্ষতা রয়েছে দলটির।

টুর্নামেন্টে অংশ নেয়াদের মধ্যে নেপাল এমন একটি দল যারা যে কোন দলকে হারাতে পারলেই সন্তুষ্ট। তবে এটি নিশ্চিত নেপালের বিপক্ষে ম্যাচকে নিজেদের প্রস্তুতি ম্যাচের অংশ হিসেবেই নিবে উপমহাদেশের দুই ক্রিকেট পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তান।

তবে ২০১৮ সাল থেকে ওয়ানডে ম্যাচের পরিসংখ্যান অনুযায়ী  টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ছয় দলের মধ্যে সবচেয়ে সফল হচ্ছে ভারত ও বাংলাদেশ। বিগত ৫ বছরের পরিসংখ্যানে ভারতের জয়ের হার ৬১.৯০ শতাংশ। এই সময়ে মোট ৮৪টি ম্যাচে অংশ নিয়ে ভারত জয় পেয়েছে ৫২টি ম্যাচে। অপরদিকে  বাংলাদেশের জয়ের হার ৫৯.০৯ শতাংশ। ৬৬টি ম্যাচ খেলে ৩৯টিতে জয় পেয়েছে টাইগাররা।

৫৭টি ম্যাচে অংশ নিয়ে ৩০ ম্যাচে জয় পাওয়া পাকিস্তানের জয়ের হার ৫২.৬৩ শতাংশ। ৭১ ম্যাচে অংশ নিয়ে শ্রীলঙ্কা জয় পেয়েছে ৩১টি ম্যাচে, জয়ের হার ৪৩.৬৬ শতাংশ। আফগানিস্তানের জয়ের হার ৪০.৯০ শতাংশ। তারা ৪৪টি ম্যাচ খেলে  জিতেছে ১৮টিতে।

আসন্ন টুর্নামেন্টে কোন একটি দলকে ফেভারিট বলতে রাজি নন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও কিংবদন্তী ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরাম। তিনি বলেছেন, সবগুলো দলের জন্যই এই টুর্নামেন্টটি বেশ কঠিন হবে। সেইসঙ্গে তিনি এটিও বলেছেন, আসরে হাল্কাভাবে নেয়া যাবে না বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাকেও। কারণ ট্রফি জয়ের মতো ক্ষমতা দুই দলেরই রয়েছে।
এক অনুষ্ঠানে আকরাম সাংবাদিকদের বলেন, গতবার আমাদের ধারণা ছিল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলবে ভারত ও পাকিস্তান। তবে শেষ পর্যন্ত শিরোপা জয় করল শ্রীলঙ্কা। তিনটি দলই বিপজ্জনক। যে কোন দলই শিরোপা জয় করতে পারে।

পাকিস্তানি কিংবদন্তী বলেন, টুর্নামেন্টের অন্য দলগুলোও বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলছে। গত আসরে শ্রীলঙ্কা ফাইনাল খেলেছে, আর ভারত ফাইনাল খেলতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা জানি ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দুই দলের ম্যাচ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা থাকে, থাকে  বিপুল সংখ্যক মানুষের দৃস্টি এবং বিরাট একটা ভক্তকুল  এটিকে অনুসরণ করে। তবে অন্য দলগুলোও এখানে আসে খেলার জন্য। সুতরাং আপনি শ্রীলঙ্কা বা বাংলাদেশকে অবহেলা করতে পারেন না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence