শিক্ষক মুরাদের চাকরিচ্যুতির অপেক্ষায় ভিকারুননিসার অভিভাবকরা

বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা হাতে লেখা বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে আসেন
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা হাতে লেখা বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে আসেন  © সংগৃহীত

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার গণিত শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারকে বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ থাকায় চাকরিচ্যুত করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অভিভাবকরা। রবিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ হুঁশিয়ার উচ্চারণ করা হয়। 

মুরাদ হোসেন সরকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর ক্যাম্পাসের দিবা শাখার গণিতের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। ২০১০ সাল থেকে তিনি এখানে পড়াচ্ছেন। পাশাপাশি আজিমপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে কোচিং সেন্টার খুলে ছাত্রী পড়াতেন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্ত শিক্ষককে চাকরিচ্যুত না করা হলে কঠোর আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে এক ভুক্তভোগীর অভিভাবক বলেন, এই শিক্ষক আগে থেকেই শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়ন করে আসছিলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ভয়ে মুখ খুলত না। এমন কাজগুলো তিনি কোচিং ক্লাসের শেষে করতেন। উনি সবসময় বলতেন, আমি তোমাদের বাবার মতো’। বাবার মতো বলে বলে ম্যানিপুলেট করতো।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দিবা শাখার গণিত শিক্ষক (মাস্টার ট্রেইনার) মুরাদ হোসেন সরকার দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যৌন নিপীড়ন চালিয়ে আসছিলেন। তার এই হীন কর্মকাণ্ডের  প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি, যাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক যৌন হয়রানির শিকার না হয়। আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি অবিলম্বে নিপীড়ক শিক্ষককে বহিষ্কার করা হোক।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালার আলোকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। নিপীড়িত শিক্ষার্থীদের ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এর আগে, আজ দুপুরে কলেজটির আজিমপুর শাখার শিক্ষার্থীরা কলেজ ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।

প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ভিকারুননিসা স্কুলের আজিমপুর শাখার প্রধান সাবনাজ সোনিয়া কামালের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন কয়েকজন অভিভাবক। সেখানে তারা তাদের সন্তানদের মুরাদ হোসেন যৌন হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ করেন। পরে সেই অভিযোগপত্র ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের কাছে পাঠানো হয়। পরদিন (৮ ফেব্রুয়ারি) অধ্যক্ষ তিন সদস্যের প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করেন। 

এরপর মুরাদ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি যৌন নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাকে আজিমপুর শাখা থেকে সরিয়ে অধ্যক্ষ কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ