তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ও রমজানে এর বিশেষ ফজিলত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৫, ০৪:২৬ PM , আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৫, ০৪:২৬ PM

রমজান ইবাদতের মৌসুম, যেখানে সাহরির সুবাদে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া অত্যন্ত সহজ হয়ে যায়। সাহরির সময়ই তাহাজ্জুদের সময় হওয়ায় এ অভ্যাস গড়ে তোলা যেতে পারে। যেহেতু প্রায় সবাই সাহরি খাওয়ার জন্য জাগেন, তাই তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ে উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে।
তাহাজ্জুদ নামাজ রাসুলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত পড়তেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন: "এবং রাত্রির কিছু অংশ তাহাজ্জুদ কায়েম করবে, ইহা তোমার এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায়, তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে (মাকামে মাহমুদে)।" (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৭৯)।
এই নামাজ সুন্নত হলেও একে অতিরিক্ত ইবাদত হিসেবে নফলও বলা হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্য এটি বিশেষ কর্তব্য ছিল। এর রাকাত সংখ্যা আট, বারো বা বিশ পর্যন্ত হতে পারে, তবে চার বা দুই রাকাত পড়লেও তাহাজ্জুদ হিসেবে গণ্য হবে। একে ‘সালাতুল লাইল’ বা ‘কিয়ামুল লাইল’ নামাজও বলা হয়।
তাহাজ্জুদের সময় ও ফজিলত
তাহাজ্জুদ নামাজের সময় মধ্যরাতের পর শুরু হয়ে ফজরের ওয়াক্তের পূর্ব পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। এ সময় আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং বান্দার ফরিয়াদ শোনেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সময়ে তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য বিশেষ আজান দেওয়া হতো, যা আজও মক্কা ও মদিনায় প্রচলিত আছে।
তাহাজ্জুদ নামাজ একাকী পড়াই উত্তম, তাই এটি নিচু স্বরে পড়তে হয় এবং ইকামাতের প্রয়োজন হয় না। দোয়া কবুলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময় হলো এই সময়। হজরত আলী (রা.) বলেন: "যাঁরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেছেন, তাঁরা শেষ রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়েছেন।"
তাহাজ্জুদ ও কোরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব
তাহাজ্জুদ নামাজের আগে-পরে কোরআন তিলাওয়াত অত্যন্ত বরকতময়। বিশেষ করে সুরা মুজাম্মিল, মুদ্দাচ্ছির, মুলক, ওয়াকিআহ, দুখান, রহমান, ইয়াসিন, হাশর ও কাহাফ তিলাওয়াত করা অত্যন্ত কল্যাণকর।
এই নামাজের কিরাআত দীর্ঘ করার সুযোগ রয়েছে। একই রাকাতে একাধিক সুরা বা আয়াত পড়া যায় এবং একই সুরা বারবার তিলাওয়াত করা যায়। রুকু, সিজদা ও অন্যান্য রুকন দীর্ঘায়িত করা মোস্তাহাব।
রোজায় তেল, সুরমা ও সুগন্ধির ব্যবহার
রোজা অবস্থায় মাথায়, চোখে, মুখে, কানে, নাকে বা শরীরের যেকোনো অংশে তেল, সুরমা বা সুগন্ধি ব্যবহার করা যায়। এতে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না।
তবে পুরুষদের জন্য দিনের বেলায় সুরমা ব্যবহার মকরুহ, কিন্তু রাতে ব্যবহার করা সুন্নত। নারীরা দিন বা রাত—যেকোনো সময় সুরমা ব্যবহার করতে পারেন।
রমজানের এই পবিত্র সময়ে ইবাদতের গুরুত্ব অনুধাবন করে তাহাজ্জুদ নামাজ ও অন্যান্য আমলগুলো নিয়মিত আদায়ের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি অর্জন করা যেতে পারে।