আন্তর্জাতিক স্পেস সেটেলমেন্ট প্রতিযোগিতায় বিশ্বসেরা বাংলাদেশের স্কুলশিক্ষার্থীরা

গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থীরা
গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থীরা  © সৌজন্যে পাওয়া

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্পেস সোসাইটি আয়োজন করেছিল ২০২৫ সালের ‘এনএসএস জেরার্ড কে. ও’নিল স্পেস সেটেলমেন্ট ডিজাইন প্রতিযোগিতা’। এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে ঢাকার উত্তরা এলাকার গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থীদের একটি দল।

দলের সদস্যরা হলেন—অদ্বৈত ভাস্কর, আহমাদ আবদুল্লাহ, আয়শা আফসারা ইয়াসমিন, সিয়াম আহমেদ, ইব্রাহিম আমিন, মুহায়ের মনযুর, আহনাফ তাহমিদ আরিয়ান, সাফওয়ান চৌধুরী ও কাজী আফসান রওনাক আনান। তাদের এই অর্জন কেবল বিদ্যালয়ের নয়, গোটা দেশের জন্যই এক গর্বিত মুহূর্ত।

এবারের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল বিশ্বের ২৫টি দেশের ২৬ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। জমা পড়েছিল ৪ হাজার ৯০০টিরও বেশি প্রকল্প। এমন প্রতিযোগিতার মধ্যে গ্লেনরিচ শিক্ষার্থীদের এই অসাধারণ সাফল্য প্রমাণ করে, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সৃজনশীলতা ও বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তায় নিজেদের প্রতিভা তুলে ধরতে সক্ষম।

মহাকাশে কল্পিত নয়, টেকসই বাস্তবতার ছোঁয়া

নবম শ্রেণির ৯ সদস্যের দলটি ‘চিরন্তন আশ্রয়’ নামের একটি মহাকাশ বসতির প্রকল্প জমা দেয় এবং ‘লার্জ গ্রুপ (গ্রেড ৯)’ ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান লাভ করে। প্রকল্পটিতে বামন গ্রহ সেরেসে এক লাখ মানুষের জন্য টেকসই, স্বনির্ভর একটি মহাকাশ বসতি স্থাপনের রূপরেখা উপস্থাপন করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক সম্পদের হ্রাস ও মহাজাগতিক দুর্যোগ থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করার লক্ষ্যে এটি একটি সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে।

প্রকল্পটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো মোবিয়াস স্ট্রিপ অনুপ্রাণিত সৌর প্যানেল—যার মাধ্যমে টেকসই ও স্বল্প ব্যয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বসতির স্বনির্ভর জীবনযাত্রা নিশ্চিত করার ভাবনা তুলে ধরা হয়।

গর্বিত প্রতিষ্ঠান, অনুপ্রাণিত তরুণেরা

গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ ড. অম্লান কে সাহা বলেন, “এই বিজয় আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। আমাদের শিক্ষার্থীরা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক সংকটের ওপর কাজ করেছে। এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা দেয়। আমরা সবসময় তাদের উদ্ভাবনী চিন্তাকে উৎসাহিত করব।”

দলের অন্যতম সদস্য আহমাদ আবদুল্লাহ জানান, “প্রায় ৫৫ দিন আমরা টানা পরিশ্রম করেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল এমন একটি পরিকল্পনা তৈরি করা, যা ভবিষ্যতে মানবজাতিকে দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।”

এই অর্জন শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, গোটা বাংলাদেশের জন্য সম্মানের। বিশ্ব পরিসরে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সৃজনশীল চিন্তায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের দক্ষ অংশগ্রহণ দেশের ভবিষ্যতের জন্য এক আশাব্যঞ্জক বার্তা বয়ে আনে।


সর্বশেষ সংবাদ