সমাজটাকে বদলে দিতে চান তরুণ কনটেন্ট ক্রিয়েটর ‘কাফি ভাই’

নুরুজ্জামান কাফি
নুরুজ্জামান কাফি  © সংগৃহীত

কুকুরের প্রতি প্রেম। কুকুরের প্রতি ভালোবাসা। আর এই প্রেম ভালোবাসা থেকে অগাধ বিশ্বাস। কুকুরকে আদর যত্ন না করলে পূর্ণতা পায় না দিন। সব সময়ের সঙ্গী প্রিয় কুকুর। যেনো এটিই অনন্য করে তুলেছে কাফিকে। মানুষের কাছে পরিচিত করে তুলেছে কুকুর প্রেমী কাফি নামে। তবে তার ভিন্ন নামও আছে।

দেশে বর্তমানে কন্টেন্ট ক্রিয়েশন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ভিডিও কন্টেন্ট তৈরী করে অনেকেই সমাজে বেশ আলোড়ন তৈরি করেছে। তাদের মধ্যেই একজন "নুরুজ্জামান কাফি"। সোশ্যাল মিডিয়ায় নুরুজ্জামান কাফি "কাফি ভাই" নামেই অধিক পরিচিত। তিনি যেমন হয়েছেন জনপ্রিয় তেমনি সকলের প্রিয় তার সঙ্গী কুকুরটিও। অফলাইন কিংবা অনলাইনে দুই জগতেই তার থেকে তার কুকুরের জনপ্রিয়তা কোনো অংশে কম নয়। কাফির কুকুরটি শুধু কুকুরই নয়, কাফির বিশ্বস্ত একজন সহযোদ্ধাও। এই কুকুরটি ছাড়া তার কন্টেন্ট যেন পূর্ণতা পায়না। এককথায় বলা যায়, কুকুর ছাড়া ভিডিও যেন লবন ছাড়া তরকারির মত।

কাফি পটুয়াখালি জেলার, কলাপাড়া উপজেলার ছেলে। কাফির ভিডিও কন্টেন্ট বানানোর শুরুটা ২০১৯ সালে। তিনি মূলত বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় আরেকটু রং মাখিয়ে হাস্যরষ্য ভাবে ভিডিও তৈরি করে থাকেন। ভিডিওগুলো হাস্যরসে ভরা থাকলেও দেশের সংকটময় পরিস্থিতিসহ নানা অসংহতি, দূর্নীতি, অনিয়মের প্রতিবাদ থাকে তার ভিডিওতে। আর তার সে সব ভিডিও পছন্দ করেন লাখো দর্শক।

কাফি বলেন, ' আমার ইচ্ছে সমাজটাকে বদলে দেয়ার, অন্যায়কে রুখে দেয়ার। বয়স আঠেরোতে কেউ চুপটি মেরে বসে থাকে না, তিনিও বসে থাকবেন না। আঠেরোর তরুণদের নিয়েই তিনি বর্তমান সমাজের চিত্র পাল্টাতে ভূমিকা রাখতে চান। আর এসব চিন্তা থেকেই শুরু হয় ভিডিও বানানো।' 

আরও পড়ুন: ‘গট ম্যারিড’ পোস্ট দিয়ে মুছে ফেললেন অপু বিশ্বাস

ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি অর্থাৎ এইদিকে আসার কারন জানিয়ে তিনি বলেন,  'এর পেছনে এক মেয়ের অবদান রয়েছে। শুরুর দিকে একটি মেয়ে আমার ভিডিওগুলো পছন্দ করত এবং সে তার প্রোফাইলেও শেয়ার করত। আর তার একেকটি শেয়ারের কারণে ভিউজ সংখ্যা হয়ে যেতে ৪ থেকে ৫ হাজারের মত। এটা দেখে আমার ভিডিও বানানোর আগ্রহ আরও দ্বিগুণ হয়ে যায়। সে সময়ে ৪-৫ হাজার ভিউ মানে আমার কাছে অনেককিছু। তবে দূর্ভাগ্যবশত আমার সাথে সেই মেয়েটির কখনো দেখা হয়নি।'

আমি তাকে দেখিনি কখনো। আর চিনিও না। তাকে হারিয়ে ফেলেছি। তার সম্পর্কে আমার কিছুই স্মরণে নেই। শুধু নামটা স্মরণে আছে। তার নাম স্বর্ণা। সেই সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো। আমার ভিডিও বানানোর পিছনে অনুপ্রেরণা দেওয়া মানুষটা তিনি। স্বর্ণা আমার ভিডিও এর মধ্যে থেকে তার ভালো লাগার ভিডিও গুলো তার প্রোফাইলে শেয়ার করতো। আর রিচ বেড়ে যেতো। সেই সময়ের ঐ আনন্দের মুহুর্তটা লিখে কিংবা বলে হয়তো প্রকাশ করা যাবে না। আমার ভিডিও এর মধ্যে আমি অনেকের নাম নিয়ে ভিডিও বানাতাম। 

তখন স্বর্ণা নামের অপরূপ মানুষটা আমাকে বলে। আপনি তো কতোজনের নাম নিয়েই ভিডিও করেন। আমার নাম নিয়েও তো ভিডিও করতে পারেন। তখন আমি বললাম হ্যা করবো। তারপর মনেমনে ভাবলাম ইউনিক কি করা যায়! তখন আমি ৫০ টাকা দিয়ে একটা গোলাপ ফুল কিনেছি। যেটা কিনা শাহবাগে ১০ টাকা কিংবা ১৫ টাকা। এখন হয়তো ২০ টাকাও হতে পারে। সবকিছুর দাম যেহেতু আকাশে।

আমি গোলাপ ফুলটি নিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গিয়ে খালি গায়ে "আই লাভ ইউ স্বর্ণা" বলে চিল্লাপাল্লা করে বলি " স্বর্ণা রোজার ইদে একটা লাল পাঞ্জাবি কিনে দিও। যদি তুমি কিনে না দেও মান সন্মান গেলে তোমার যাবে আমার কিছু হবে না। কারণ তোমার সুদর্শন বয়ফ্রেন্ড খালি গায়ে সমুদ্র পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে"। এই ভিডিও মুহুর্তে'ই ভাইরাল হয়ে যায়।

মানুষজন আমি রাস্তায় বের হলে স্বর্ণা'র বয়ফ্রেন্ড আসছে। ঐ দেখ স্বর্ণা'র সুদর্শন বয়ফ্রেন্ড যাচ্ছে। এই স্বর্ণা'র জামাই, এ-সব বলে মানুষ ডাকাডাকি করতে শুরু করে আমাকে। এই ভিডিও আমি তাকে সেন্ডও করি। তারপর কি যে হলো! কি যে এক রহস্য তৈরি হলো! আমি কিছুই জানি না। না তার আইডি আছে আমার কাছে। না তার বাসার ঠিকানা, না কিছু। কিচ্ছু নাই তার আমার কাছে জানা। আমি তাকে এখনও সন্মান করি। মন থেকে তাকে শ্রদ্ধা করি আমি।

যে একটা মানুষের জন্য আজ আমাকে হাজারও মানুষ চিনে। যার সাথে আমার আদৌও কথা হয়নি, দেখা হয়নি, কিন্তু তার প্রতি আমার সম্মান অনেক বেশি। কারণ এই মানুষটাই ছিলো আমার আজকের কাফি ভাই হয়ে উঠার অনুপ্রেরণা। আমি অনেক বড় কিছু হয়ে যায়নি কিন্তু যতটুকু হয়েছে তার থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়ে। কিন্তু আফসোস তার সাথে কোন যোগাযোগ নেই। সেই মানুষটাকেই আমি হারিয়ে ফেললাম। আমি স্বর্ণাকে এখনও খুজি,অপেক্ষায় থাকি। আমি কৃতজ্ঞ এই মানুষটার প্রতি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence