প্রশাসনের আশ্বাসে হলে ফিরেছেন বেরোবি ছাত্রীরা

প্রশাসনের আশ্বাসে হলে ফিরেছে বেরোবি ছাত্রীরা
প্রশাসনের আশ্বাসে হলে ফিরেছে বেরোবি ছাত্রীরা  © টিডিসি ফটো

প্রভোস্টের পদত্যাগসহ ১২ দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (০৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে রাত ১০টায় হলে ফিরে যান আন্দোলনকারীরা।

আন্দোলন চলাকালে প্রভোস্টসহ হল প্রশাসনে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা গেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীদের। এসময় হলের রেজিস্ট্রার ও হল প্রভোস্টের পদত্যাগসহ ১২ দফা দাবির কথা উল্লেখ করেন তারা।

শিক্ষাথীদের দাবি গুলো হলো- প্রভোস্টকে শিক্ষার্থীবান্ধব এবং মার্জিত ব্যবহারের হতে হবে তা না হলে পদত্যাগ করতে হবে; ডাইনিংয়ের খাবারে ভর্তুকি, খাবারের মান উন্নয়ন করতে হবে; দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্টারের পদত্যাগ; চার নম্বর ফটক খোলা রাখা; ওয়াইফাইয়ের লাইন ঠিক করে প্রতিটি রুমে রাউটারের ব্যবস্থা করতে হবে; প্রত্যক রুমে জরুরি ভিত্তিতে ফ্যান লাগিয়ে দিতে হবে;

হলের প্রত্যক কর্মচারীর ব্যবহার ভালো করতে হবে অন্যথায় পরিবর্তন করতে হবে; আবাসিক ভাড়া কমিয়ে ৫০ টাকা করতে হবে; নির্মাণাধীন হলের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে; রিড়িং রুম, কমন রুম এবং গেস্ট রুম দিতে হবে এবং পরিষ্কার করার জন্য সুইপারদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, হলের মধ্যে বিদ্যুৎ সমস্যা লেগেই আছে। রমজান মাস আসার পর থেকে বিকালবেলা বিদ্যুৎ থাকে না। বিষয়টি নিয়ে হলের অফিসে বারবার জানানো হলেও কোন সমাধান আসেনি। পরে বাধ্য হয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রভোস্ট তানিয়া তোফাজকে ফোন করেন ছাত্রীরা। ফোন পেয়ে হল প্রভোস্ট শিক্ষার্থীদের সাথে রূঢ় আচরণ করেন বলে অভিযোগ করেন তাদের।

ছাত্রীদের অভিযোগ, ফোন কলে হল প্রভোস্ট তানিয়া তোফাজ তাদের বলেছেন ‘কিসের ঠেকা পড়েছে আমার এতো রাতে হলে যাব? তোমরা পড়াশোনা করতে আসনি। এসেছ আড্ডা দিতে।’ এছাড়াও আরও পারসোনাল বিষয়েও প্রভোস্ট কথা বলেছেন বলে আন্দোলনকারী ছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন।

আরও পড়ুন: প্রভোস্টের পদত্যাগসহ ১২ দাবিতে বেরোবির হলে ছাত্রীদের বিক্ষোভ

প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা ৭টায় ছাত্রীরা হলের সামনে এবং পরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শিউলী আক্তার ছাত্রীদের দেখতে আসেন। এই সময় হলের প্রভোস্ট তানিয়া তোফাজ আন্দোলনের স্থানে এসে পৌঁছালে তিনি ছাত্রীদের সাথে কথা না বলেই সরাসরি হলের অফিসে চলে যান।

এতে শিক্ষার্থীরা আরও উত্তেজিত হয়ে প্রভোস্টের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এসময় শিক্ষার্থীদেরকে অবমূল্যায়ন করে প্রভোস্ট হল অফিসে গেছেন বলেও জানান তারা। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে তৎক্ষণাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক নুরুজ্জামান খান, বহিরাঙ্গন পরিচালক সাব্বির আহমেদ চৌধুরীসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনেকেই উপস্থিত হন।

এসময় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান ও প্রক্টর শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে উপাচার্যের সাথে কথা বলার আশ্বাস দিয়ে পরিবেশ শান্ত করে রাত ১০টায় শিক্ষার্থীদের ছাত্রীদের হলে পাঠিয়ে দেন। হল প্রভোস্ট তানিয়া তোফাজ ছাত্রীদের হলের ভেতরে নিয়ে তাদের সাথে রাত ১১টা পর্যন্ত কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তর সূত্রে জানা যায়, রমজান মাসে একযোগে বেশি পরিমান হিটার চালানোর কারণে লাইন ফল্ট করে। এতে বারবার সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

হল প্রভোস্ট তানিয়া তোফাজ বলেন, শিক্ষার্থীরা আগামীকাল তাদের ১২ দফা দাবি লিখিতভাবে জানালে আমরা এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে সমাধানের ব্যবস্থা করব। শিক্ষার্থীদের সাথে রূঢ় আচরণের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আনঅফিসিয়ালী। তারা যা বলেছে এটা সত্য নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী বলেন, আন্দোলনের কথা শুনে আমি প্রথমে সহকারী প্রক্টরকে পাঠিয়েছি। পরে আমি নিজেও সেখানে গিয়েছি। শিক্ষাথীদের দাবিগুলো সব যৌক্তিক ছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সব সমস্যার সমাধান করা হবে। ইলেক্ট্রিসিটির যে সমস্যা ছিল সেটার সমাধান ইতোমধ্যে করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ