বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফের ১২ ঘণ্টার আলটিমেটাম

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন  © সংগৃহীত

চার দফাসহ শিক্ষার্থীদের নামে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। সন্ধ্যা ৭টায় মশাল মিছিল করে সড়ক অবরোধ করেন তারা। এ সময় সড়কে প্রায় কয়েক শ শিক্ষার্থী জড়ো হন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

তবে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করলে প্রায় চার ঘণ্টা পর পুনরায় ১২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে সড়ক ছাড়েন শিক্ষার্থীরা। এরপরও দাবি বাস্তবায়ন না হলে পরবর্তী সময়ে সড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।

এদিকে মহাসড়ক অবরোধ চলমান থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে কোনো সমাধানে আসেনি। শিক্ষার্থীরা বলেন, চার দফা দাবিসহ শিক্ষার্থীদের নামে মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন চুপ থাকায় তারা মহাসড়কে নামতে বাধ্য হন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জাহিদ সাকিন বলেন, উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করে আসছি। তার বরাবর আমরা চার দফা দাবির স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু উপাচার্যের এ বিষয়ে কোনো কর্ণপাত নেই। একজন উপাচার্য কীভাবে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন? তিনি আর যা-ই হোন শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবেন না। আমরা জানি মহাসড়ক অবরোধে মানুষের ভোগান্তি হবে। কিন্তু আমরা সত্যিই অসহায়।

অর্থনীতি বিভাগের আবু সাঈদ বলেন, সব সমস্যার একটা যৌগিক বিস্ফোরণ এটা। শিক্ষার্থীরা অনেক দিন ধরে তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো জানিয়ে আসছে। তবে কোনো এক অজানা কারণে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কথা শুনছেন না।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোকাব্বেল শেখ বলেন, আপনি (উপাচার্য) এসির বাতাস খাচ্ছেন। আমরা সংকটে ভুগছি। আপনাকে তো পাওয়া যায় না। আপনি মাসের পর মাস ঢাকায় থাকেন। সরকার কি লাখ লাখ টাকা দেয় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে?  বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস জানুন। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা কোনো আপস করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। মামলার ভয় দেখিয়ে আমাদের লাভ নাই। আমাদের দাবি মেনে নিন।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার কার্যালয় তালা দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর উপাচার্য বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন করে ১০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। আগেও শিক্ষার্থীরা উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন করায় তাদের নামে মামলা করার অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিনকে আওয়ামী দোসর আখ্যা দিয়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সভা থেকে অব্যাহতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত ২৪ এপ্রিল চার দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের সংগঠন ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চ দুই দিনের আলটিমেটাম দিয়েছিল প্রশাসনকে।

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো
ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে ওঠা মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহার করা; তাকে সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে পুনর্বহাল করা; আওয়ামী লীগের পদধারী রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অবিলম্বে অপসারণ করা এবং ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের সমর্থক শিক্ষক-কর্মচারীকে অপসারণ করা।


সর্বশেষ সংবাদ