ইবির হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি শিক্ষার্থীদের

প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত বাংলা নববর্ষ উৎসবের শোভাযাত্রায় হলের র্যালিতে না যাওয়ায় হলের ছাত্রীদের দুপুরের খাবার বন্ধের ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করেছে হলের ছাত্রীরা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে এসব ঘটনা ঘটে। এদিন খাবার বন্ধের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হলে হল প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তা প্রশমনের চেষ্টা করে। তবে, তাদের না কথা না মেনে প্রভোস্টের পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নববর্ষ উপলক্ষে হলে সকাল ১১টায় হল থেকে একটা শোভাযাত্রা বের করার কথা ছিল। একইসাথে র্যালি শেষে দুপুরে পান্তাভাত, ভর্তা ও রুই মাছ ভাজির খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু হলে প্রায় ৪০০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও মাত্র ১০/১৫ জন শিক্ষার্থী শোভাযাত্রায় আসায় প্রভোস্ট হতাশ হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে শোভাযাত্রা এবং দুপুরের খাবার পরিবেশন বন্ধ ঘোষণা করেন। ফলে ক্লাস পরীক্ষা শেষে হলে যেয়ে খাবার না পেয়ে চরম ক্ষিপ্ত হয় শিক্ষার্থীরা।
পরবর্তীতে হলের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির আভাস পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। এসময় প্রভোস্ট, হল প্রশাসনের কর্মকর্তা, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি আর আগাতে অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে হল প্রভোস্ট ও কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে দুর্ব্যবহার ও অন্যান্য ভুল ত্রুটির জন্য দুঃখপ্রকাশ করলেও তা ছাত্রীদের মন গলাতে পারেনি। তারা প্রভোস্টের পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়ে যার যার রুমে চলে যায়।
হলের শিক্ষার্থীরা বলেন, শোভাযাত্রা কখনো বাধ্যতামূলক হতে পারেনা। আর সেখানে না যাওয়ায় খাবার বন্ধ করার মানে আমাদের শাস্তি দেওয়া। যাদের ক্লাস পরীক্ষা ছিল তাদের অনেক অসুবিধা হয়েছে। ইভেন স্যার এটাও বলেছে যে, যাদের ক্লাস পরীক্ষা আছে তাদের রুটিন ফটোকপি করে স্যারের কাছে জমা দিয়ে আসতে হবে, এটা কি ধরনের কথা? এটা কি তিনি বলতে পারেন? সবসময় তিনি নিজের মর্জিমাফিক কাজ করে থাকেন, কিছু হলেই ছাত্রীদের দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয়।
আবাসিক শিক্ষার্থী মিম বলেন, ইবিতে সবথেকে বঞ্চিত হল হলো খালেদা জিয়া হল, সব দিক থেকেই আমরা পিছিয়ে। এর আগেও আমাদের হলে বিভিন্ন সমস্যা হয়েছে তার কোন সঠিক সমাধান আমাদের প্রভোস্ট দিতে পারেননি। আজও এর ব্যতিক্রম নয়। অনেকেই চার ঘন্টা পরীক্ষা দিয়ে এসে শুনে খাবার বন্ধ। হলের ডাইনিংয়ে খাবার নিতে গেলে মামা বললো দুপুরে খাবার দেওয়া হবেনা; এমনকি রাতেও হবে কি-না জানিনা। প্রভোস্ট স্যারের নির্দেশ না পেলে কিছু বলতে পারছিনা। আমরা আর কিছু শুনতে চাইনা এই প্রভোস্টের পদত্যাগ চাই। তিনি তার দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে আমরা মনে করি।
জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, এরকম পরিস্থিতির খবর পেয়ে আমরা দুপুর থেকে হলে রয়েছি। প্রভোস্ট, হল প্রশাসন, বিভিন্ন ফ্লোরের শিক্ষার্থী সবার সাথে কথা বলতেছি। মেয়েদের বিভিন্ন অভিযোগের কথা শুনতেছি, সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আলোচনা চলছে তবে আমরা কোন সিদ্ধান্তে পৌছুতে পারিনি৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা চলছে বিষয়টি সমাধান করার।
তবে এব্যাপারে খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিনের বক্তব্য নিতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।