তাবলিগের তালিম বন্ধ, ভিক্টোরিয়ার অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ

  © সংগৃহীত

ক্যাম্পাসের মসজিদে তাবলিগের তালিম বন্ধের পর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাশার ভূঁঞাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করার একাধিক ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনার তর্কবিতর্কের অংশ ফেসবুকে লাইভ করে শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে কুমিল্লার ধর্মপুরে কলেজটির ডিগ্রি ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবদুল মজিদ জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আগামীকাল বুধবার (২২ জানুয়ারি) একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। এ ঘটনায় জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। 

জানা যায়, ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি ক্যাম্পাসের মসজিদে তাবলিগ জামাতের সোমবারের (২০ জানুয়ারি) সাপ্তাহিক তালিম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ। এ বিষয়ে দীর্ঘ দিনের মতবিরোধে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বেলা ১১টা ২০ মিনিট থেকে ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করেন কলেজের নজরুল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ধর্মপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, অধ্যক্ষের সাথে তুমুল তর্ক-বিতর্কে জড়িয়েছেন মসজিদের মুসল্লী ও ছাত্ররা। অধ্যক্ষকে তারা বলছেন, আপনি সমাধান না দিয়ে বের হতে পারবেন না। প্রতিউত্তরে পাশে থাকা উপাধ্যক্ষ বলেন আমাদের কাজ আছে। 

এ সময় শিক্ষক পরিষদের যুগ্ম-সম্পাদক বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. মুনছুর হেল্লাল ও প্রধান সহকারী মাজহারুল ইসলামকে উত্তেজিত ছাত্র-জনতার সাথে কথা বলতে দেখা যায়। অধ্যক্ষ ধমক দিয়ে বলেন এখানে কে কথা বলছে? পেছন থেকে উচ্চ শব্দে একজন বলেন, আমরা কথা বলছি। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষ কক্ষ ত্যাগের চেষ্টা করলে ছাত্রদের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। পরে তালীম চালু রাখার সিদ্ধান্ত দিয়ে কলেজ থেকে বের হয়ে যান অধ্যক্ষ আবুল বাশার ভূঁঞা। এসময় মুসুল্লীরা আল্লাহু আকবার ধ্বনি করেন।

কলেজের শিক্ষার্থী ও নজরুল হলের ছাত্ররা জানান, কলেজ অধ্যক্ষ বিরোধী মত সহ্য করতে পারেন না। ছাত্রসেনার বাইরে কিছু হলে তিনি বন্ধ করে দেন। স্যার বরুড়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার ছাত্র। সেখানে ছাত্রসেনা করতেন। তিনি দাওয়াতে তাবলিগ পছন্দ করেন না।

ধর্মপুর গ্রামের বাসিন্দা ও কলেজ মসজিদের মুসল্লী মিজানুর রহমান বলেন, ‘এখানে কোন গ্রুপিং নেই। সম্ভবত অর্থনীতির শিক্ষক নজরুল ইসলাম ও আরেকজন আছেন গোলাম মোহাম্মদ। তারা সা'দ গ্রুপ। পেছন থেকে তাদের কোন কিছু থাকতে পারে। কিন্তু এর আগে কোনো অধ্যক্ষ মসজিদে দাওয়াতি কাজ বন্ধ করেনি। এখানে ধর্মীয় আলোচনা হয়। কোনো গ্রুপিং নেই।’

সাপ্তাহিক কোরআন তালিম বন্ধের বিষয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবদুল মজিদ বলেন, ‘বিষয়টি তাবলিগের দু'পক্ষের বিষয়। সাদপন্থী ও জুবায়েরপন্থী দুটি একপক্ষ। সোমবার (২০ জানুয়ারি) একপক্ষ তালিম করে এশার নামাজের পর। অন্য পক্ষ বাঁধা দেয়। আমরা বলছি তালিম বন্ধ। তখন সবাই মিলে অধ্যক্ষের রুমে আসে সোমবারের পক্ষ। এখানে কোন হাতাহাতি বা ধস্তাধস্তি হয়নি। যদি মারামারি হয়, তখন কী আমরা চেয়ে চেয়ে দেখবো?’

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করলেও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাশার ভূঁঞা রিসিভ করেননি।


সর্বশেষ সংবাদ