বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবিতে প্রধান ফটকে তালা ইবি শিক্ষার্থীদের

ইবির মেইন গেট তালা দেয় শিক্ষার্থীরা
ইবির মেইন গেট তালা দেয় শিক্ষার্থীরা

ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওগ্রাফি এন্ড ইনভাইরনমেন্ট বিভাগের নাম পরিবর্তন করে এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স এন্ড টেকনোলজি করার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। 

রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে বিভাগের সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে মেইন গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। প্রায় আধা ঘণ্টা যাবত মেইন গেট অবরোধ করে বিক্ষোভ করার পর সভাপতি ও প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে সাক্ষাতের শর্তে তালা খুলে দেয় তারা। পরবর্তীতে, প্রশাসনের কনফারেন্স রুমে উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এসময় শিক্ষার্থীরা একশান একশান, ডাইরেক্ট একশান; নাম চেঞ্জের বাহানা, মানিনা মানবো না; অবৈধ নাম পরিবর্তন, মানিনা মানবো না; আমার স্বাক্ষর করলো কে, এর উত্তর আগে দে; চাটুকারদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না; অ্যাকশন টু অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন, স্বাক্ষর জালিয়াতির বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন; বিভাগের অন্যায়, শিক্ষার্থীরা কত সয়? আমার পরিচয় কাড়লো কে? এই উত্তর আগে দে ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভাগ চালুর পর থেকে বিভাগের নাম ছিল এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড জিওগ্রাফি। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রসপেক্টাসে এই নাম দেওয়া হলেও ভর্তি পর শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন বিভাগের নাম জিওগ্রাফি এন্ড এনভাইরনমেন্ট। শিক্ষার্থীদের দাবি, তিন বছর আগে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে তাদের অজান্তে স্বাক্ষর নিয়ে বিভাগের নাম পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি জানার পর দীর্ঘদিন ধরে বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। সর্বশেষ নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেয়ার পরেও একাধিকবার বিভাগীয় সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনে নিকট দাবি জানালেও দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেওয়ায় আজকে মেইন গেট অবরোধ করে বিক্ষোভে নেমেছেন তারা। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, এই বিভাগের সকল শিক্ষার্থী চাচ্ছে বিভাগের নামটি পরিবর্তন করা হোক। গত দুই মাস যাবত আমরা বিভিন্নভাবে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি কিন্তু দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে আমরা বিভাগের নাম ফলক করলে নিজেদের সংরক্ষণে নিলে দুষ্কৃতকারী আখ্যা দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় কিন্তু দুই মাস যাবত আমরা যে যৌক্তিক দাবি জানিয়ে আসছি সে বিষয়ে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিতে অনাগ্রহী। একটি বিভাগের নাম সে বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিচয় ফলক। আমরা পরিচয় হীনতায় ভুগছি, অতিসত্বর আমাদের বিভাগের নাম পরিবর্তনে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আরো কর্মসূচি দেওয়া হবে। 

শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, সম্পূর্ণভাবে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ভূগোল করা হয়েছে। আমরা গত ১৪ই সেপ্টেম্বর থেকে বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছি। এর মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিভাগের নাম পরিবর্তন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমাদের দাবি আপনার জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি কিন্তু কাজ না হয় আজকে বাধ্য হয়ে মেইন গেটে তালা দিয়েছি। আমরা বিভাগীয় সভাপতি, প্রক্টর  প্রক্টরিয়াল বডি এবং ভিসি স্যারের সাথে দেখা করলেও দৃশ্যমান কোনো প্রসেস লক্ষ্য করিনি। 

পরবর্তীতে, উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করে তার নিকট বিভাগের যাবতীয় সমস্যা, নাম পরিবর্তনের অতীত ইতিহাস, ঠিক কোন কোন কারণে তারা বিভাগের নাম পরিবর্তন চাচ্ছে এবং প্রসেসটি কেন আগাচ্ছে না সে বিষয়ে বিস্তারিত অভিযোগ শুনেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব নসরুল্লাহ। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যেকোনো বিষয়ে সরাসরি তার কাছে না আসে গেট আটকানোর মত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেন তাদের বিভাগের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিভাগীয় সভাপতি দিন অফিসের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর প্রেরণের পরামর্শ দেন এবং অধিকাংশ শিক্ষার্থী চাইলে তাদের চাহিদামতো বিভাগের নাম পরিবর্তন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। 

বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক বিপুল রায় বলেন, শিক্ষার্থীদের বিভাগের নামের পরিবর্তনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর বিভাগীয় শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতিমধ্যে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে জানানো হয়েছে। এছাড়াও আজকে ভিসি স্যার যেভাবে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন সেভাবেই শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে আমি প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence