শাবিপ্রবিতে চা শ্রমিক সন্তান ও খেলোয়াড় কোটায় আসন বেড়েছে
- মোফাজ্জল হক, শাবিপ্রবি
- প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ০৪:১০ PM , আপডেট: ০৩ মে ২০২৪, ০৫:৪০ PM
২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তিতে চা-শ্রমিক ও খেলোয়ার কোটায় আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে। চা শ্রমিক সন্তানদের পড়ালেখায় আগ্রহী করতে ও খেলাধুলায় শাবিপ্রবির সুনাম বৃদ্ধি করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথম কোনো বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে চা-শ্রমিক সন্তানদের কোটায় ভর্তির সুযোগ এটিই প্রথম। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে কোটার বিষয়ে নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চা-শ্রমিক কোটায় আগে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারতেন। আর খেলোয়াড় কোটায় ভর্তি হতেন ৬ জন শিক্ষার্থী। তবে চলতি বছরে এ দুই ধরনের কোটায় ভর্তিতে আরও ৫টি আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে শাবিপ্রবির বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটের বিভাগগুলোর মধ্যে পদার্থবিজ্ঞানে ৬৫টি, রসায়নে ৬৫টি, গণিতে ৮০টি, পরিসংখ্যানে ৮০টি, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ১০০টি, কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্সে ৫০টি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৫০টি, সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৫০টি, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৫০টি এবং ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজিতে ৪০টি আসন রয়েছে।
এছাড়া পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে আসন সংখ্যা ৩৫টি, ভূগোল ও পরিবেশে ৫০টি, মেকানিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩৫টি, সমুদ্রবিজ্ঞানে ৩০টি, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৫০টি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজিতে ৩৫টি, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজিতে ৩৫টি, ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এভায়রনমেন্টাল সায়েন্সে ৫৫টি ও আর্কিটেকচারে ৩০টি আসন রয়েছে।
‘বি’ ইউনিটভুক্ত (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায়) বিভাগসমূহের মধ্যে রয়েছে- অর্থনীতিতে ৬৬টি, সমাজবিজ্ঞানে ৬৬টি, পলিটিক্যাল স্টাডিজে ৬৬টি, লোকপ্রশাসনে ৬৬টি, নৃ-বিজ্ঞানে ৬৬টি, সমাজকর্মে ৬৬টি, ইংরেজিতে ৫০টি এবং বাংলায় ৬০ আসন রয়েছে।
‘সি’ ইউনিটে (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য শাখায়) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে ৭৫টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। ‘এ’ ইউনিটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ৯৮৫টি ও কোটার জন্য ৭০টি সিট, ‘বি’ ইউনিটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০৬টি ও কোটার জন্য ২৯টি এবং ‘সি’ ইউনিটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ৭৫টি ও কোটার জন্য ৬টি আসন বরাদ্ধ রয়েছে।
এছাড়া এবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ও কোটায় সর্বমোট ১ হাজার ৬৭১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবেন।
কোটার আসন বৃদ্ধি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও স্কুল অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড মিনারেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবু সাঈদ আরফিন বলেন, চা শ্রমিকদের সন্তানদের পড়াশোনায় আগ্রহী করতে ও খেলাধুলায় শাবিপ্রবির সুনাম বৃদ্ধি করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় খেলাধুলায় যেভাবে সুনাম কুড়াচ্ছে, সে প্রেক্ষিতে সামনের দিনগুলোতে শাবিপ্রবি যেন আরও সুনাম বৃদ্ধি করতে পারে— সেজন্য খেলোয়ারদেরও কোটা বৃদ্ধি করেছি।
তিনি জানান, চা-শ্রমিক সন্তান কোটায় এবার ৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবেন। যা পূর্বে ছিল ৪ জন। খেলোয়ার কোটায় ১০ জন ভর্তি হতে পারবেন, যা পূর্বে ছিল ৬ জন । এছাড়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ২৮ জন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী/জাতিসত্ত্বা/হরিজন-দলিত কোটায় ২৮ জন, প্রতিবন্ধী কোটায় ১৪ জন, পোষ্য কোটায় ২০ জনসহ সর্বমোট ১০৫টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির জন্য প্রকাশিত নির্দেশিকা হতে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ব্যতিত অন্য কেউ (নাতি, নাতনি) মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
কোটার আসন বৃদ্ধি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, দেশে আমরাই প্রথম চা শ্রমিক সন্তানদের জন্য কোটা দিয়েছি। কারণ এ অঞ্চলে চা শ্রমিক সন্তানেরা অনেক পরিশ্রম করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসে। তাই তাদের কথা বিবেচনা করে কোটায় আসন বাড়ানো হয়েছে।