প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৩ PM , আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:৩৯ PM
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক (জনসংযোগ) ও পিএস টু ভিসি এস এম হাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরে এ প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে। এতে দাবি করা হয়, উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে ও খন্ডিত তথ্য দিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ‘নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন ভেঙে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ সৌমিত্র শেখরের’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস। এর প্রেক্ষিতেই প্রতিবাদলিপিটি পাঠানো হয়।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তির শর্তের বিষয়ে প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বস্তুত বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন, ফোকলোর এবং নাট্যকলা ও পরিবেশনাবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়ম মেনে শিক্ষক নেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউজিসির নীতিমালানুযায়ী প্রার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসির ন্যূনতম জিপিএ ৪.৫ থাকতে হবে, আর নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় চেয়েছে ৪। এটি বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য উল্লেখ করা হয়েছে দাবি করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ২০২১ সালের ৯ জুন ইউজিসির অভিন্ন নীতিমালায় প্রার্থীর এসএসসি ও এইচএসসিতে নির্দিষ্ট জিপিএ থাকতে হবে বলে উল্লেখ নেই। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় মেধাবী প্রার্থীর আশায় এসএসসি ও এসএসসিতে ৪ থাকতে হবে বলে উল্লেখ করে। এতে নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি।
এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন কোন বিভাগের ছাত্ররা আবেদন করতে পারবে তা নির্ধারণ করে প্ল্যানিং কমিটি। এক্ষেত্রে উপাচার্যের কোনো বক্তব্য থাকে না। এ বিভাগটি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন নামে প্রতিষ্ঠিত। এ অবস্থায় প্ল্যানিং কমিটির শিক্ষকরা ১৪টি বিষয়ে ডিগ্রিধারী প্রার্থীর আবেদন চান, যেগুলো বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এক্ষেত্রে নিয়মের কোনো বিঘ্ন ঘটেনি বলে দাবি প্রশাসনের।
নিয়োগ কমিটিতে বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে ঢাকার নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপক ছিলেন জানিয়ে বলা হয়, তারা প্রার্থীদের কোডিংয়ের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করে সে ফলাফলের ভিত্তিতে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করেন। যাদের নির্বাচিত করা হয় তাদের সঙ্গে উপাচার্যের পূর্ব পরিচয় ছিল না। উপাচার্য তার পছন্দের প্রার্থীকে চাকরি দিয়েছেন বলে যে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে, তা মিথ্যাচার বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
অধ্যাপক উজ্জ্বলকুমার প্রধানকে বিভাগীয় সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে প্রশ্নের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, বিভাগটির শিক্ষকদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রেস কনফারেন্স ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ ডিন হিসেবে অধ্যাপক প্রধানকে বিভাগের সভাপতি দায়িত্ব দেন। উপাচার্যকেও এই দায়িত্ব নিতে হয়েছিল। স্পেশাল সিন্ডিকেট সভারও আয়োজন করতে হয়। এখানে আইনের ব্যত্যয় হয়নি।
উপাচার্যের ইমেইল সংক্রান্ত তথ্যেও সত্যকে আড়াল করা হয়েছে দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের থেকে জানানো হয়, নিয়োগের কার্যক্রম রেজিস্ট্রার দপ্তরে প্রার্থীদের জমাকৃত কাগজপত্রের ভিত্তিতে হয়। এক্ষেত্রে দাপ্তরিক কোনো অসঙ্গতি বা প্রশ্ন নিবারণকল্পে প্রার্থীদের শুধু আবেদনপত্রের স্ক্যান কপি পাঠানোর কথা বলা হয়। এগুলো এখনো আনরিড আছে বা খোলা হয়নি বলে কালো কালি বোল্ড আকারে ইমেইলে সংরক্ষিত। এর সঙ্গে অন্য কিছুর সংশ্লিষ্টতা খোঁজার প্রশ্নই আসে না। তাছাড়া ইমেইল যেহেতু পাসওয়ার্ড দিয়ে খুলতে হয়, তাই অন্য কোনো নামে ইমেইল খুললেও সেটি উপাচার্য এককভাবেই জানবেন।
ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারকে সিন্ডিকেট সদস্য করা নিয়ে যে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে- সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির বক্তব্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে সংযুক্ত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অমান্য করার কোনো ক্ষমতা নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই। বিভাগীয় কমিশনারকে সিন্ডিকেট থেকে বাদ দেয়া উপাচার্যের এখতিয়ারে পড়ে না।
আরো পড়ুন: যে নির্দেশনা না মানলে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে না
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় যোগদান করার পর শিক্ষা, গবেষণা উন্নয়ন খাতে যে পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন তাতে ঈর্ষান্বিত হয়েছে কিছু মানুষ। কিছু মানুষের স্বার্থে পড়েছে আঘাত। এ মানুষগুলোর দ্বারা প্ররোচিত হয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন করা হয়েছে দাবি করে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির রেখাচিত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য প্রতিবেদন করা হয়েছে।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে মঞ্জুরি কমিশনে দেওয়া অভিযোগপত্র, নিয়োগসহ অন্যান্য নথি এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বক্তব্য নিয়ে জনস্বার্থ বিবেচনায় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের নিজস্ব কোনও বক্তব্য নেই।