ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২ মামলা
জবি ছাত্রী খাদিজাকে জামিন দেননি আপিল বিভাগ
- জবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৩, ১০:১৩ AM , আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৩, ১১:১২ AM
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় জগন্নাথ শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরাকে জামিন দেননি আপিল বিভাগ। প্রায় ৯ মাস ধরে কারাগারে আছেন জবি শিক্ষার্থী খাদিজা। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার বিচারপতি।
সোমবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চ ৪ মাস খাদিজার জামিন স্ট্যান্ডওভার রাখেন।
খাদিজা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়।
খাদিজাতুল কুবরার বোন সিরাজুম মনিরা বলেন, উনারা এমন কেন করছে আমার বোনের সাথে। কুরবানির ঈদের আগে ২৯ জুন শুনানি হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু শুনানি তখনও পিছানো হয়েছে। আজ একবারে ৪ মাস জামিন স্ট্যান্ডওভার রেখেছেন।
তিনি বলেন, আমার বোন খাদিজা ভালো নেই, জেলের ভিতর মানুষ কেমনে ভালো থাকতে পারে। ওর কিডনি স্টোন ছিলো ঠিকভাবে ট্রিটমেন্ট করা হয় নাই। ওখান থেকে রিপোর্ট করছে ওরা বলতেছে ও নাকি এভসুল্যাটলি ফাইন। কিন্তু ওর (খাদিজা) সাথে দেখা হলে বলে, ওর শরীর একদমই ভালো থাকে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখন তার অতিসত্বর জামিন চাই। একটা মেয়ে মানুষ দশ মাসের বেশি সময় ধরে জেলে আছে। এটলিস্ট ওরে পড়াশোনার সুযোগ করে দেয়া দরকার। আমরা চাই ওর পড়াশোনা যাতে বন্ধ না হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরের শৃঙ্খলা বোর্ডে বিষয়টা আলোচনা করবো, কি করা যায়। বিষয়টা যেহেতু আদালতে আছে আদালতের মাধ্যমে সে বেরিয়ে আসুক।
খাদিজার নামে একটি মামলা রাজধানীর কলাবাগান থানায়, অপরটি নিউমার্কেট থানায়। দুটি মামলার বাদীই পুলিশ। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানা-পুলিশ। তখন থেকে তিনি কারাগারে।
নিউমার্কেট থানার মামলায় এসআই খাইরুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ২৫ মিনিটের সময় মুঠোফোনে মেজর (অব.) দেলোয়ারের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও দেখতে পান। ‘হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামের ভিডিওর সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরার উপস্থাপনায় দেলোয়ার হোসেন তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের বৈধ গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন।
মামলাটি রেকর্ড করা হয় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে। মামলার এজাহারের সঙ্গে তিন পাতার স্ক্রিনশট ও ভিডিও–সংবলিত সিডি সংযুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: কোরবানির ঈদও কারাগারে কাটবে জবি ছাত্রী খাদিজার
মামলায় অভিযোগ আনা হয়, খাদিজাতুল কুবরা ও দেলোয়ার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যা, মানহানিকর অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। আসামিরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টির অপচেষ্টাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের প্রয়াস চালাচ্ছেন।
তাঁর নামে ২০২০ সালে যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়, তখন তিনি ১৭ বছর বয়সী। অথচ তাঁকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে মামলাটি করা হয়। কিডনির সমস্যায় ভুগলেও ঢাকার একটি আদালতে খাদিজার জামিন আবেদন কয়েক দফায় নাকচ হয়েছে।