ঢাবিসহ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলেন মাসুমা

মেধাবী শিক্ষার্থী মাসুমা আক্তার
মেধাবী শিক্ষার্থী মাসুমা আক্তার  © ফাইল ফটো

নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার চরমধুয়া ইউনিয়নের জেলে রফিক উদ্দিনের মেয়ে মাসুমা আক্তার। ছোট বেলা থেকেই নিজ প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে আসছে মাসুমা। কিন্তু অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে অষ্টম শ্রেণীতেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল মেধাবী শিক্ষার্থী মাসুমার লেখাপড়া।

সে খবর জানতে পেরে তার পাশে দাঁড়ান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আহসান সিকদার। তিনি মাসুমার সকল ধরনের লেখাপড়ার খরচ বহন করার দায়িত্ব নেন। মাসুমাকে ছাত্রী হোস্টেলে রেখে কলেজে পড়ানো, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিংসহ যাবতীয় খরচ বহন করেন বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আহসান সিকদার। 

মেধাবী এই শিক্ষার্থীর অর্জনের যেন শেষ নেই। তার শিক্ষাজীবনের কোনও পরীক্ষাতেই খারাপ কিংবা অকৃতকার্যের ইতিহাস নেই। মাসুমা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ৬৪৪তম, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৬৭০তম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০তম হয়েছেন। শিক্ষাজীবনে তার অর্জনের ঝুলিতে জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসি’র প্রত্যেকটিতে রয়েছে জিপিএ: ৫.০০। 

জেলে বাবার ৫ ছেলে-মেয়ের মাঝে মাসুমা ৩য় সন্তান। অর্থনৈতিক টানাপোড়নের মাঝেই কাটছে তাদের রঙ্গিন শৈশব ও কৈশোর। মাসুমা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমি ভাবতেও পারিনি আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবো। আল্লাহর রহমতে এবং দোয়ায় আমি আজ কৃতকার্য হয়েছি।

আজকে পরিবারসহ গ্রামের সকলের মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছি।খুশি করতে পেরেছি আমাদের চেয়ারম্যানসহ আমার সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের। যিনি না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়া তো দূরের কথা, কবেই বিয়ে হয়ে যেত আমার। আমার পরিশ্রম আর চেষ্টার মাধ্যমে আজকের এই জায়গায় আসতে পেরেছি। ভবিষ্যতে বিসিএস ক্যাডার হয়ে মা-বাবার কষ্ট দূর করব, দেশ ও সমাজের জন্য কাজ করব—যুক্ত করেন মেধাবী এই শিক্ষার্থী।

এ নিয়ে আহসান শিকদার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমার অনেক আগে থেকেই স্বপ্ন ছিল আমাদের এলাকার বিদ্যালয় থেকে, কিংবা আমার এলাকা থেকে অনেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে, বিসিএস ক্যাডার হবে, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হবে। আমার সেই লালিত স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে।

ভবিষ্যতেও মাসুমার খরচ তিনি বহন করবেন কিনা—এমন প্রশ্নে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি ৮ম শ্রেণি থেকেই মেধাবী শিক্ষার্থী মাসুমার যাবতীয় খরচ বহন করে আসছি, তাকে আমি আমার নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসি। সুতরাং চাকরি নেয়া পর্যন্ত আমি তার সকল খরচ বহন করবো। এ সময় তিনি এলাকার এমন সকল শিক্ষার্থীদের তার সাথে যোগাযোগ করার আহবান জানিয়ে সকলের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।


সর্বশেষ সংবাদ