ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন, পাওয়া যাবে না হলের সিসিটিভি ফুটেজ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার ১৩ দিন পেরুলেও সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। মনিটর সচল থাকলেও ক্যামেরার-মাদারবোর্ডের বায়োসের ব্যাটারি নষ্ট থাকায় ফুটেজ পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল। ফলে তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় হল কর্তৃপক্ষের কাছে ফুটেজ চাইলেও তারা তা দিতে পারেননি।

গত রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে নবীন এক ছাত্রীকে ডেকে রাত ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত নবীন এক ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের পরদিন ভয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান ওই ভুক্তভোগী ছাত্রী।

এ ঘটনার তদন্তে গত শুক্রবার রাতে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হল কর্তৃপক্ষের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ চাইলে শনিবার দেওয়ার কথা জানান। শনিবারে তারা ফুটেজ উদ্ধার করতে গেলে বিপাকে পড়েন। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়েল আইসিটি সেলের দুই টেকনিশিয়ানকে হলে ডাকেন। তারাও ফুটেজ উদ্ধারে ব্যর্থ হন।

তাদের ভাষ্য মতে, সিটিটিভি ফুটেজের সময় পরিবর্তন হয়েছে মনিটরে ১৯৭০ সালের সময় দেখা যাচ্ছে। ক্যামেরার মাদারবোর্ডের বায়োসের ব্যাটারি নষ্ট হওয়ার কারণে মূলত এমনটি হয়েছে। কবে বায়োসের ব্যাটারি নষ্ট হয়েছে জানেন না হল কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন: ইবির ফুলপরীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ছাত্রলীগের অভিযুক্তরা

হল সূত্রে জানা গেছে, হলটিতে প্রধান ফটক, অফিস, করিডোর, প্রাচীর, ডায়নিংসহ মোট ১২টি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। এই ক্যামেরাগুলোর মনিটরিং সেল রয়েছে প্রভোস্টের কার্যালয়ে। নিয়ম অনুযায়ী এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব হল কর্তৃপক্ষের। তবে ফুটেজের এই অবস্থার জন্য হল কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে চুরি ও ককটেল ফোটানোর ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করতে গেলেও ফুটেজ পাওয়া যায়নি। হল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, তদারকি না করায় এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

কয়েকজন শিক্ষক বলেন, হল প্রশাসন তদারকি করে না। শুধুমাত্র প্রয়োজনের সময় তারা খোঁজ করে। ফলে ফুটেজ পাওয়া যায় না।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল বলেন, ওই রাতে কি ঘটেছিল তথ্য উদঘাটনে হল কর্তৃপক্ষের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হয়েছিল। তবে হল কর্তৃপক্ষ তা সরবরাহ করতে পারেনি। ফুটেজ হাতে পেলে তদন্ত কার্যক্রমে সহায়ক হতো।

আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, ক্যামেরার মাদারবোর্ডের বায়োসের ব্যাটারির মাধ্যমে সিসি ফুটেজে তারিখ ও সময় ঠিক রাখে। সেটি নষ্ট থাকায় ইনিশিয়াল ডেট এ চলে গেছে। আমার ধারণায় ফুটেজ পাওয়া যাবে না। তবে এক্সপার্ট এনে চেষ্টা করা যেতে পারে।
 
দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, গত বুধবার আইসিটি সেল পরিচালকের কাছে একটি চিঠি দিয়েছিলাম। এটির উত্তরে একটি চিঠি মনে হয় এসেছে। ফুটেজ হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ আছে তবে ওটা ঢাকাতে পাঠাতে হবে জানতে পেরেছি। এছাড়া দুই একদিনের মধ্যে তিন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জানা যাবে বলে জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ