‘সাবেক ভিসির গাছ কাটা পড়লো বর্তমান ভিসির গাছ লাগানোর দিনে’

অকারণে গাছ কাটায় গাছে কাফনের কাপড় মুড়িয়ে অভিনব প্রতিবাদ
অকারণে গাছ কাটায় গাছে কাফনের কাপড় মুড়িয়ে অভিনব প্রতিবাদ  © টিডিসি ফটো

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে(বেরোবি) সাবেক ভিসির হাতে লাগানো গাছ কাটা পড়লো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে। ১২অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা দিবস পালনের একটি তেঁতুল গাছ কর্তন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরি করতে। যেটি স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্যের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনার উদ্বোধন করার সময় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে এম নূর-উন-নবী লাগিয়েছেন। 

অন্যদিকে, একইদিনে (১২অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা দিবস পালনে সময় একটি গাছ লাগান উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ। একদিকে গাছ কাটা ও অন্যদিকে গাছ লাগানো নিয়ে তুমুল সমালোচনা চলছে   বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে।

অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে  অকারণে গাছ কাটায় গাছে কাফনের কাপড় মুড়িয়ে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছে বৃক্ষ প্রেমীশিক্ষার্থীরা। ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিষয়টি ছড়িয়ে পরলে শিক্ষার্থীদের সমালোচনায় পড়ে গাছ কর্তনের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা ।

জানা গেছে, ১২অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা দিবস পালনের দিনে একদিকে উপাচার্য বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে অপরদিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরির জন্য একটি তেঁতুল গাছ কর্তন করে অনুষ্ঠানের আয়োজনে থাকা সদস্যরা ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানান, স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্যের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনার উদ্বোধন করার সময় তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে এম নূর-উন-নবী কর্তনকৃত তেঁতুল গাছটি লাগান। গাছটি কোন কারণ ছাড়াই কেটে ফেলা হয়েছে। এমনকি কাটা অংশটি কোথায় রাখা হয়েছে তা কেউ জানে না। 

আরও পড়ুন: ফুল-ফ্রি স্কলারশিপ নিয়ে স্নাতকোত্তর করুন নেদারল্যান্ডে

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম  মুশফিকুর রহমান বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি স্যার একটি বৃক্ষরোপণ করেছিলেন সেটি আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ তম জন্মদিনে গাছটি কেটে ফেলেছে এবং ইটের বেষ্টনীটি গুড়িয়ে দিয়েছে যা সত্যি খুবই নিন্দনীয়। শিক্ষিত মহলের থেকে এটা মোটেও কাম্য নয়। এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই ।

আরেক শিক্ষার্থী মাহমুদ আল ফয়সাল বলেন, ১০ তারিখে বিজয় সড়কের স্তম্ভের ওখানে দাঁড়িয়েছিলাম। একটা লোক এসে কুড়াল নিয়ে গাছ কাটতে শুরু করে। গাছ কাটার কারণ জানতে চাইলে তিনি তুহিন ওয়াদুদ স্যারের কথা বলেন। তখন তুহিন ওয়াদুদ স্যার স্টেজের ওখানে ছিলেন। তিনি স্পটে এসে আবার গাছ কাটতে বলেন।  

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েসের  রংপুর শাখার সভাপতি  স্বপন মাহমুদ বলেন,গত ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ছিল। প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ বছরে পদার্পণ করেছে সফলতার সাথে। এটি আমাদের জন্য আনন্দের, উৎসবের এবং উদযাপনের, কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করতে গিয়ে মনকে বিষন্ন করে দিয়েছে বৃক্ষ নিধন। ক্যাম্পাসে বৃক্ষ নিধন মোটেও কাম্য নয়। পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ জায়গা ঠিক করে পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষ রোপণ করা হোক, যাতে পরিবর্তে বৃক্ষ নিধন না করতে হয়।

এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডঃ মোহাম্মদ ওয়াদুদুর রহমান বলেন , আমি ব্যক্তিগত কাজে সৈয়দপুরে আছি ।এক- দেড় ঘণ্টা পরে এ বিষয়ে জানাবো ।এরপর দফায় দফায় তার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। 

এ নিয়ে প্রক্টর গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টি আমি সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুক দেখলাম। প্রশাসন থেকে গাছ কাটার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের থেকে কোনো লিখিত অভিযোগপত্র পাইনি। লিখিতো অভিযোগপত্র পেলে বিষয়টি আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।

আর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদকে কয়েকবার তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।


সর্বশেষ সংবাদ