রাত পোহালেই আরেকটি বিসিএস পরীক্ষা, গতি আনতে যেসব উদ্যোগ

সরকারি কর্ম কমিশন
সরকারি কর্ম কমিশন  © ফাইল ছবি

রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। ইতিমধ্যে আসনবিন্যাসও প্রকাশিত হয়েছে। শুক্রবার (১৯ মে) ঢাকাসহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এরে আগে সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) নতুন চারজন সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে বিসিএস পরীক্ষায় দ্রুত শেষ করার পথ সুগম হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

জানা গেছে, ৪৫তম বিসিএসের মাধ্যমে দুই হাজার ৩০৯ জন ক্যাডার নেওয়া হবে। নন-ক্যাডারে নেওয়া হবে ১ হাজার ২২ জনকে। এবারই প্রথম ক্যাডারের পাশাপাশি নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে পিএসসি। ক্যাডারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিয়োগ হবে চিকিৎসায়। সহকারী ও ডেন্টাল সার্জন মিলিয়ে ৫৩৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগ পাবেন ৪৩৭ জন। এ ছাড়া পুলিশে ৮০, কাস্টমসে ৫৪, প্রশাসনে ২৭৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। ক্যাডার পদে যেমন পছন্দ নির্দিষ্ট করে দেওয়া যায়, তেমনই নন-ক্যাডারের পছন্দের তালিকা দেওয়া হয়েছে। নন-ক্যাডারের প্রায় অর্ধেক পদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের জন্য রাখা হয়েছে। ৪৫৭ জনকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।

৪৫তম বিসিএসের বিষয়ে পিএসসি জানিয়েছে, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টা ২৫ মিনিটের মধ্যে প্রার্থীরা নির্ধারিত পরীক্ষা হলে নিজ নিজ পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করে নির্দিষ্ট আসন গ্রহণ করবেন। হলে প্রবেশের সময় প্রার্থীদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নির্দিষ্ট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রার্থীদের উত্তরপত্রের চারটি সেট থাকবে।

প্রার্থীরা উত্তরপত্রে নিজ জেলা ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখবেন এবং সংশ্লিষ্ট বৃত্তগুলো কালো কালির বল পয়েন্ট কলম দিয়ে পূরণ করবেন। হাজিরা তালিকায় স্বাক্ষর করবেন। এ সময় প্রবেশপত্র টেবিলের ওপর খুলে রাখতে হবে। প্রবেশপত্রের ছবি ও স্বাক্ষরের সাথে হাজিরা তালিকার ছবি ও স্বাক্ষর মিলিয়ে দেখা হবে। এতে গরমিল পাওয়া গেলে বহিষ্কারসহ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উত্তরপত্রের অনুরূপ প্রশ্নপত্রেরও চারটি সেট থাকবে। প্রার্থী যে সেট নম্বরের উত্তরপত্র পাবেন তাকে সে সেট নম্বরের প্রশ্নপত্র দেয়া হবে। উত্তরপত্রের সেট নম্বর এবং প্রশ্নপত্রের সেট নম্বর এক ও অভিন্ন হতে হবে। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে প্রার্থীরা উত্তর দেওয়া শুরু করবেন। পরীক্ষা শেষে প্রার্থীরা নিজ নিজ আসনে অবস্থান করবেন। পরিদর্শকরা উত্তরপত্র সংগ্রহ করার পর প্রার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কক্ষ ত্যাগ করবেন। প্রশ্নপত্রও সঙ্গে নিয়ে যাবেন।

প্রার্থীদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর আট ডিজিট সংবলিত। রেজিস্ট্রেশন নম্বরের ডিজিটসমূহ উত্তরপত্রের প্রযোজ্য ঘরে কালো কালির বল পয়েন্ট কলম দিয়ে লিখে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। প্রতিটি উত্তরপত্রে সেট নম্বরের নির্ধারিত স্থানে এবং নিচের সংশ্লিষ্ট বৃত্তটি মুদ্রিত থাকবে। উত্তরপত্রে সেট নম্বর লেখা এবং সেট নম্বরের বৃত্ত ভরাট করার প্রয়োজন হবে না।

আরো পড়ুন: ৪৫তম বিসিএস প্রিলির আসনবিন্যাস প্রকাশ

সকাল ১০টায় প্রশ্নপত্র প্রাপ্তির পর প্রার্থী সেট নম্বর এবং উত্তরপত্রের সেট নম্বর অভিন্ন কিনা নিশ্চিত হবেন। প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্রের সেট নম্বর অভিন্ন না হলে পরিদর্শককে অবহিত করতে হবে।

৪৫তম প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুক্রবার (১৯ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী হবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষায় হাতঘড়ি, অলঙ্কার ও কোনো ধরনের ডিভাইস নিয়ে যাওয়া যাবে না। সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষা কেন্দ্রে কী আনা যাবে আর কী আনা যাবে না সে সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পরীক্ষার হলে নিষিদ্ধ সামগ্রী পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর প্রার্থিতা বাতিলসহ ভবিষ্যতে পিএসসির সব নিয়োগ পরীক্ষার জন্য অযোগ্য হবেন।বিজ্ঞপ্তির শর্তানুযায়ী প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বই-পুস্তক, ঘড়ি, মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্যাংক বা ক্রেডিট কার্ডসদৃশ ডিভাইস, গহনা, ব্যাগসহ হলে প্রবেশ করা নিষেধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এজন্য পরীক্ষার্থীদের কিছু বিষয় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের উপস্থিতিতে প্রবেশপত্র এবং মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে মোবাইল ফোন, ঘড়ি, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ নিষিদ্ধ সামগ্রী তল্লাশির মধ্য দিয়ে হলে প্রবেশ করতে হবে পরীক্ষার্থীদের। নিষিদ্ধ সামগ্রী সঙ্গে না আনার জন্য পরীক্ষার্থীদের ফোনে এসএমএস পাঠানো হবে। সে নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

আরো পড়ুন: ৪৫তম বিসিএস: পরীক্ষা কেন্দ্রে কী নেওয়া যাবে না, জানাল পিএসসি

পরীক্ষার্থীর কানের ওপর কোনো আবরণ রাখবেন না, খোলা রাখতে হবে। কানে হিয়ারিং এইড ব্যবহারের প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শপত্রসহ কমিশনের অনুমোদন নিতে হবে। পরীক্ষার্থীর কাছে নিষিদ্ধ সামগ্রী পাওয়া গেলে তা বাজেয়াপ্তসহ বিধিভঙ্গের কারণে পরীক্ষার্থীর প্রার্থিতা বাতিলসহ ভবিষ্যতে সব নিয়োগ পরীক্ষার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হবে। 

এদিকে বিসিএসের গতি বাড়াতে ও নিয়োগের সময় কমাতে পিএসসির সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ইতিমদ্যে ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য করার আইন পাস করেছে সরকার। পরে নতুন চার সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিএসসির এক কর্মকর্তা বলেন, ৪১তম বিসিএসের ভাইভা চলছে। ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা শিগগিরই শুরু হবে। সদস্যরা ভাইভা বোর্ডে থাকেন। তাই ভাইভা চলাকালে আর অন্য কোনো ভাইভা নেওয়া যায় না। নতুন সদস্য নিয়োগ হওয়ায় এর পরিধি বাড়বে। এতে বিসিএসে গতি আসবে।

পিএসসির সাবেক এক চেয়ারম্যান ও সদস্য বলেন, কমিশনে বেশি সদস্য আসা মানে গতি আসা। সদস্য বাড়লে ভাইভার বেশি বোর্ড হবে। এতে ভাইভা গতিশীল হবে। ফলে দ্রুত বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ