আন্তর্জাতিক মানের গ্র্যাজুয়েট তৈরি করছে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক

ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক
ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক  © টিডিসি ফটো

মাত্র তিনজন শিক্ষার্থী নিয়ে ১৯৯৬ সালে উচ্চশিক্ষায় যাত্রা শুরু ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের। মাত্র তিন দশকের যাত্রায় ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী-অভিভাবকের আস্থার জায়গায় পরিণত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বর্তমানে ৮টি আন্ডারগ্রাজুয়েট ও ১০টি পোস্টগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামের অধীনে প্রায় ছয় হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র ফার্মগেটে এক একর জায়গা জুড়ে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির দৃষ্টিনন্দন স্থায়ী ক্যাম্পাস। এছাড়াও পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনায় প্রায় তিন শতাধিক দক্ষ শিক্ষক নিযুক্ত রয়েছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়াও ঢাকার পূর্বাচলে ৮ বিঘা জমি রয়েছে যা এখন হস্তান্তরের প্রক্রিয়াধীন। ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, ‘কমিটেড টু এক্সিলেন্স’ এই প্রতিপাদ্যে নিয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে ইউএপি।

উপাচার্য আরও জানান, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক ফাউন্ডেশন ফর হিউম্যান অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এফএইচএসডি) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। ইউএপির দৃষ্টিভঙ্গি হল উন্নত সমাজের জন্য উচ্চ শিক্ষা গবেষণা এবং উন্নয়নে উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং মানবিকতাকে এগিয়ে নেওয়া। এই লক্ষ্যে আমরা সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম দায়িত্ব হলো গবেষণালব্ধ নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি করা। এ জন্য দরকার স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ের গবেষক শিক্ষার্থী। তাই সীমিত পর্যায়ে হলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়ন এবং গবেষণার পরিধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে-অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান

ইউএপি বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি করছে বলে মনে করেন উপাচার্য কামরুল আহসান। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে একটি ‘ডাইনামিক অ্যান্ড কমপ্লেক্স সিস্টেম’ (গতিশীল ও জটিল ব্যবস্থা)। বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতির দিক বিবেচনা করলে প্রথমেই আসবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এর সঙ্গে চলে আসে লাইব্রেরি-ল্যাবরেটরির উন্নতি। আমাদের বিশ্বমানের ল্যাবরেটরি আছে। ৫২টি উন্নতমানের ক্লাস রুম আছে, যেখানে ব্লেন্ডেড লার্নিং, ফ্লিপ লার্নিং, রিমোট লার্নিংয়ের সব ব্যবস্থা আছে। অনলাইন বা জুমে ক্লাস করার ব্যবস্থাও আছে।

New Project - 2024-07-07T204434-110

উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান

বর্তমানে আমাদের ৮টি আন্ডারগ্রাজুয়েট ও ১০টি পোস্টগ্রাজুয়েট প্রোগ্রাম চলমান আছে। আটটি বিভাগ হলো- স্থাপত্য, ব্যবসা প্রশাসন, পুরকৌশল ও পরিবেশ প্রকৌশল, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল, ফার্মেসি, আইন, এবং ইংরেজি বিভাগে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শুধু ইউএপিতে ‘ইউনেস্কো মদনজিৎ সিং সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড লিগ্যাল এবং হিউম্যান রাইটস স্টাডিজ’ নামে একটি আন্তর্জাতিক প্রোগ্রাম রয়েছে। বর্তমানে ভারত, ভুটান ও নেপালের শিক্ষার্থীরা এই প্রোগ্রামের অধীনে অধ্যয়ন করছে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি চালুর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম দায়িত্ব হলো গবেষণালব্ধ নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি করা। এ জন্য দরকার স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ের গবেষক শিক্ষার্থী। তাই সীমিত পর্যায়ে হলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়ন এবং গবেষণার পরিধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। 

গবেষণা এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে ইউএপি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এরমধ্যে ইউএপির শিক্ষক এবং গবেষকগণ নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় জার্নালে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক মান উন্নয়নে সহায়ক হচ্ছে। মানসম্পন্ন গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশে শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পুরস্কারের দিয়ে থাকে। এছাড়া গবেষণা অনুদান, কনফারেন্স ও সেমিনার আয়োজন অন্যতম-অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান

পিএইচডি চালুর বিষয়ে ইউএপির পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট বাজেটের ২ থেকে ৩ শতাংশ গবেষণায় ব্যবহার করি। এক্ষেত্রে ইউএপি গবেষণার মান এবং সুযোগ সুযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী হতে পারে। এক্ষেত্রে ইউএপি প্রায়োগিক গবেষণার উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়ার জন্য সার্বিকভাবে প্রস্তত রয়েছ।

দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার চেয়ে ব্যবসার বিষয়টিকে বেশি প্রাধান্য দেয়। ইউএপির শিক্ষা ব্যয়ের প্রসঙ্গ আসলে উপাচার্য জানান, দেশের অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় ইউএপি’র শিক্ষা ব্যয় কম। ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী ৬ শতাংশ শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে পাঠদানের কথা থাকলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফল, সেমিস্টারের ফলাফল, বিভিন্ন বৃত্তি এবং ভিসি স্পেশাল ওয়েভার মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত টিউশন ফি মুক্ত পড়াশোনার সুযোগ করে দিচ্ছে।

র‍্যাংকিংয়ে শীর্ষে যেতে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানান উপাচার্য। এরমধ্যে গুণগত শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়ন, উচ্চমানের শিক্ষাক্রম এবং পাঠ্যক্রম তৈরি, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশীদারিত্ব স্থাপন এবং শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য উন্নত ল্যাব সুবিধা সরবরাহ। 

New Project - 2024-07-07T205044-685

ফার্মগেটে ইউএপির দৃষ্টিনন্দন স্থায়ী ক্যাম্পাস

কর্মসংস্থানে ইউএপির শিক্ষার্থীদের সফলতার গল্প তুলে ধরে এই অধ্যাপক বলেন, আমাদের গ্রাজুয়েটরা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের মতো সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মেগা প্রজেক্টেগুলোতে ইউএপির গ্রাজুয়েটরা সুনামের সাথে কাজ করছে। সম্প্রতি আমাদের স্থাপত্য বিভাগের একজন শিক্ষার্থী বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত অন্যতম পুরস্কার ‘তামাউজ এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ (অনারেবল মেনশন) এ ভূষিত হয়েছে।

শিক্ষা-গবেষণায় ইউএপির অগ্রগতি সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, গবেষণা এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে ইউএপি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এরমধ্যে ইউএপির শিক্ষক এবং গবেষকগণ নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় জার্নালে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক মান উন্নয়নে সহায়ক হচ্ছে। মানসম্পন্ন গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশে শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পুরস্কারের দিয়ে থাকে। এছাড়া গবেষণা অনুদান, কনফারেন্স ও সেমিনার আয়োজন অন্যতম।

১৯৯৬ সালে উচ্চশিক্ষায় যাত্রা শুরু ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের। মাত্র তিন দশকের যাত্রায় ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী-অভিভাবকের আস্থার জায়গায় পরিণত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বর্তমানে ৮টি আন্ডারগ্রাজুয়েট ও ১০টি পোস্টগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামের অধীনে প্রায় ছয় হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।

সর্বোপরি আগামী দিনে ইউএপির অগ্রগতি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতি নিয়ে আমাদের সুনিদির্ষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয়ে এবং ১০ বছরে বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। যেখানে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষার মান, গবেষণা কার্যক্রম এবং উদ্ভাবনী উদ্যোগে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নিশ্চিত হবে। 


সর্বশেষ সংবাদ