প্রেমিকা নিয়ে হতাশার কথা মাকে বলেছিলেন ড্যাফোডিলের হৃদয়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৩, ০৭:০৯ PM , আপডেট: ০৯ মে ২০২৩, ০৮:৪৫ PM
রাজধানীর কলাবাগান লেক সার্কাস রোডের একটি ভাড়াবাসা থেকে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরের দিকে কুদরত-ই-খোদা হৃদয় (২৪) নামের ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরে বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে তার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এই ময়নাতদন্ত করেন ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকরা। এরপর মরদেহটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ভাড়াবাসায় ড্যাফোডিল ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ
পরিবার জানায়, ঘটনার আগের দিন গতকাল সোমবার (৮ মে) দিবাগত রাতে মোবাইলে একটি মেয়েকে নিয়ে মায়ের কাছে হতাশার কথা বলেন হৃদয়। মৃত হৃদয় সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার উত্তর হোসেনপুর এলাকার আরিফ আহমেদ মিঠুর ছেলে। রাজধানীর কলাবাগান লেক সার্কাস রোডের ৯৫ নম্বর বাড়ির চিলেকোঠায় একাই থাকতেন তিনি।
মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে কলাবাগান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মঞ্জুরুল ইসলাম সজীব উল্লেখ করেন, বাড়ির চিলেকোঠার কক্ষে শায়িত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। হৃদয়ের গলার বাঁ পাশে অর্ধচন্দ্রাকৃতির কালো দাগ আছে। তিনি ফ্যানের সঙ্গে কাপড় পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
ঢামেক হাসপাতালে উপস্থিত হৃদয়ের মামা ফেরদৌস হাসান বলেন, একটি মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানতাম। গতকাল দিবাগত রাতে হৃদয় তার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলে। সেই সময় ওই মেয়েকে নিয়ে অনেক হতাশার কথা মাকে জানায় সে। সব শুনে তার মা তাকে বিভিন্নভাবে শান্তনা দেন।
তিনি আরও জানান, আজ সকালে ওই মেয়ে নিজেই হৃদয়ের ফোন থেকে তার মাকে কল দিয়ে জানান, হৃদয় আর নেই। তবে বিষয়টি প্রথমে বিশ্বাস করেননি তারা। পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমে নিশ্চিত হন যে, হৃদয় মারা গেছেন।
আজ ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ওই মেয়ে বেশ কয়েকবার হৃদয়ের বাসায় যান এবং আবার বেরিয়ে আসেন। তখন তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। সর্বশেষ সকাল ৯টার দিকে মেয়েটি তাদের হৃদয়ের মৃত্যু খবর দেন বলেও জানান তিনি।
হৃদয়ের সহপাঠী নিলয় বিশ্বাস জানান, ২০১৮ সালে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে জার্নালিজম বিভাগে ভর্তি হন হৃদয়। ২০২১ সালে অনার্স শেষ করার পর মাস্টর্সে ভর্তি হন। এরপরই একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। এক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তার। বিষয়টি হৃদয়ের পরিবারও জানতো। হৃদয়ের বাসায় যাতায়াতও ছিল তার।
তিনি আরও জানান, গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে হৃদয় তার একটি গ্রুপে হতাশামূলক কিছু কথা লেখেন। তবে রাতে সেটি কেউ খেয়াল করেনি। আজ সকালে তার মৃত্যুর খবর শুনতে পান তিনি। মানসিক কোনো চাপ থেকেই হৃদয় আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা তাদের।