উপাচার্য নেই ৩১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে, ৩৬টিতে নেই কোষাধ্যক্ষ

উপাচার্য নেই ৩১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে, ৩৬টিতে নেই কোষাধ্যক্ষ
উপাচার্য নেই ৩১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে, ৩৬টিতে নেই কোষাধ্যক্ষ  © ফাইল ছবি

দেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকা ১০২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩১টিতেই নেই উপাচার্য। ৭০টিতে নেই উপ-উপাচার্য। আর কোষাধ্যক্ষ নেই এমন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৬টি। এরমধ্যে আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শীর্ষ এই তিনটি পদই শূন্য থাকে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব পদগুলো শূন্য রয়েছে সেখানের শিক্ষার্থীরা তাদের কাজে সমস্যায় পড়ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, দি পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ও ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটিতে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ—গুরুত্বপূর্ণ এ তিনটিই পদই শূন্য রয়েছে এ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অর্জিত ডিগ্রির মূল সনদে আচার্যের নিয়োগ করা উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে স্বাক্ষর করতে হয়। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, যেখানে নিয়মিত উপাচার্য নেই, সেখানে তারা এসব কাজে সমস্যায় পড়ছেন।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগে প্রতি পদে তিনজনের নাম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হয়। সেটা যাচাই-বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয় প্রতি পদে একজনকে নিয়োগের জন্য। রাষ্ট্রপতি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য।

গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদ শূন্য থাকা রাজধানীর দি পিপলস ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার আবুবকর বলেন, ট্রাস্টি বোর্ডের কোরাম পূর্ণ না হওয়ায় তারা উপাচার্য পদে নিয়োগের প্রস্তাব পাঠাতে পারছেন না। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্যের পদ নেই। কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য তারা প্রস্তাব পাঠিয়েছেন।

আরও পড়ুন: বছর পেরোনোর আগেই নর্থ সাউথের মাইশার পরিণতি হলো তামান্নার

বিশ্ববিদ্যালয়ে শীর্ষ পদগুলোতে নিয়োগে দুটি কারণে দেরি হয়। প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড উপাচার্য নিয়োগে তিনজনের নাম পাঠাতে দেরি করে এবং পছন্দের লোক নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা চালায়। দ্বিতীয়ত, অনেক সময় নাম প্রস্তাবের পরও সরকার নিয়োগ দিতে দেরি করে। এমনটাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইউজিসি জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বার বার উপাচার্য নিয়োগের তাগাদা দেওয়ার পরও তারা এই পদে কাউকে নিয়োগ দিচ্ছেন না। এর পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টিদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে চাওয়ার মনোভাব দায়ী। উপাচার্য না থাকায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সমাবর্তন আয়োজন করতে পারেনি।

ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরিচালক ড. ওমর ফারুক বলেছেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ শূন্য পদগুলো পূরণের জন্য আমরা বার বার তাগাদা দিচ্ছি। এই পদগুলো পূরণ না হলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভালোভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে না।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, সরকার দেশের উন্নতি চায় বলে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিচ্ছে। সমস্যা হলো, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যোগ্য ও দক্ষ জনবলের অভাবে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ কঠিন হয়।

উপাচার্য না থাকলে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে চলতে পারেন না বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, উপাচার্য না থাকলে শৃঙ্খলাও থাকে না। উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অপরিহার্য অঙ্গ। এসব পদ ফাঁকা রাখা কোনোভাবেই বাঞ্ছনীয় নয়।


সর্বশেষ সংবাদ