ইউজিসিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভর্তি নিচ্ছে ৪ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

  © লোগো

গত মাসের শেষের দিকে দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের দেখভালের দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, একাধিকবার সময় দেওয়ার পরও স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়া এবং প্রয়োজনীয় চেষ্টা না করায় চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ সিদ্ধান্ত বাস্তাবায়ন শুরু হওয়ার কথা ছিল।

তবে কমিশনের এ সিদ্ধান্তের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বছরের শুরু থেকেই ভর্তি প্রক্রিয়া চালু রেখেছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়। এ চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলো-স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি ও ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।

তথ্যমতে,যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আইনানুযায়ী নিজস্ব ক্যাম্পাসে না যাবে, তাদের ২০২৩ সালের জানুয়ারির শুরু থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইউজিসি। বছর শেষে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করা হয়েছে। ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে তিন থেকে ছয় মাস সময় দিয়েছে ইউজিসি। আর দুটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া অন্য কোথাও (অস্থায়ী ক্যাম্পাস) শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না। এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউজিসি থেকে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

তবে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকলেও সেখানে অধ্যয়নরত সব শিক্ষার্থীর নিয়মিত পাঠদান, পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম চলবে। শুধুমাত্র নতুন করে তারা শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকেই চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম চলছে।

স্প্রিং সেমিস্টারে ভর্তির বিষয়ে কমিশনের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির অ্যাডমিশন অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের ২০২৩ সালের ‘স্প্রিং সেশনে’ ভর্তি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গত শনিবার জানানো হয়, সেদিন আইন অনুষদের মৌখিক পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং আসন খালি থাকা সাপেক্ষে আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ভর্তি নেয়া হবে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের। চলমান সেমিস্টারের ক্লাস শুরু হতে পারে আগামী ২২-২৩ জানুয়ারি তারিখের মধ্যে।

আরও জানানো হয়েছে, তাদের সকল প্রোগামে ভর্তি কার্যক্রম চলমান রয়েছে কোন শিক্ষার্থী এ সেশনে ভর্তি হতে না পারলে তিনি আগামী মার্চ থেকে পরবর্তী ‘সামার সেশনে’ জন্য ভর্তি হতে পারবেন। তবে তা গড়াতে পারে আগামী জুন-জুলাইয়ের পর্যন্ত।

তবে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আবদুল মতিন দাবি করেন, ইউজিসির সিদ্ধান্ত মতে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। 

আর প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে (ভর্তিচ্ছুদের) জানানো হয়েছে, বর্তমানে তাদের ‘স্প্রিং সেশনে’ ভর্তি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কবে নাগাদ শিক্ষার্থী ভর্তি শেষ হবে তা নির্দিষ্ট করে না বললেও তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খুব দ্রুতই তা শেষ হবে। কেননা আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিষ্ঠানটির পরবর্তী সেমিস্টার শুরু হবে এবং আগামী মে থেকে পরবর্তী সেশনে ভর্তি শুরু হবে। 

অন্যদিকে, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটিতে এখন চলমান সেশনের মিড-টার্ম পরীক্ষা থাকায় তারা আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ভর্তি গ্রহণ শুরু করবে বলে জানানো হয়েছে। তবে তাদের ভর্তি চলমান আছে জানিয়ে (ভর্তিচ্ছুদের) বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষার্থী এ সেশনে ভর্তি হতে না পারলে আগামী জুনে অথবা জুলাইয়ে ভর্তি হতে পারবে প্রতিষ্ঠানটিতে।

কমিশনের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা আরেক বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশা ইউনিভার্সিটিতে চলমান ‘স্প্রিং সেশনে’ শিক্ষার্থী ভর্তি সাময়িক বন্ধ রয়েছে। তবে আগামী মে মাস থেকে পরবর্তী অর্থাৎ ‘সামার সেশনে’ ভর্তি শুরু হবে বলে অ্যাডমিশন অফিস থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার এম ওয়ালিউল বারী দাবি করেন, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সব ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ইউজিসির নির্দেশনা তো অমান্য করা যাবে না, যোগ করেন এম ওয়ালিউল বারী।

 

এ বিষয়ে ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সবাইকে চিঠি দিয়ে এই নিষেধাজ্ঞার কথা বলে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে চলতি বছরের ‍শুরু থেকে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার কথা। এ রকম যদি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় তাহলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ