পাবলিকের চেয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী দ্বিগুণের বেশি

বিদেশী শিক্ষার্থী
বিদেশী শিক্ষার্থী  © প্রতিকী ছবি

দেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে জনপ্রিয়তা ও শিক্ষার মানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এগিয়ে থাকলেও বিদেশী শিক্ষার্থীদের আগ্রহের তালিকায় পিছিয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সবশেষ  প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ২ হাজার ৩১৭ জন বিদেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ৭৬৭ জন ও ৩২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৫৫০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছিলেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে।

ইউজিসির প্রতিবেদনে অনুসারে, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ৪১ জন, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (আইইউবি) ২৭ জন, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে (আইইউবিএটি) ৫১ জন, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে ৪১ জন, আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২ জন, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে ৭ জন, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে ২ জন, ইউনিভাসিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে ৭ জন, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ জন, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে ৫০ জন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ৫২০ জন, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ১৭৯ জন, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি ১০ জন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ১২০ জন, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে ৮৫ জন, সিটি ইউনিভার্সিটিতে ৩২ জন, প্রাইম ইউনিভার্সিটিতে ২৪ জন ও নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জনসহ দেশের ৩২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১ হাজার ৫৫০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছেন।

আরও পড়ুন: কোন বিদেশি শিক্ষার্থী নেই ২৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে

এদিকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে, বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৪ জন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ১১ জন, বাংলাদেশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬২ জন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ জন, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৯ জন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬ জন, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬৬ জন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ জন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৩ জন, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ জন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ জন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ জন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭ জন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ জন, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে ৯ জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬৫ জন ও খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ জন। 

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, 'নানা কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের ক্যাম্পাস হতে হয়। এর জন্য অনেক কিছুর সংযোজন করা দরকার। বিশ্বব্যাপী অনেকে দৌড়াচ্ছে, আর আমরা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছি। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে বহু বিশ্ববিদ্যালয় নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, সেসব আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। সেখানে অনেক অনেক অর্থায়ন আছে। বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ দেয়।'

আগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকতো, এ কারণে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক মনে হতো উল্লেখ করে মো. আখতারুজ্জামান বলেন, 'এখন আমরা তাদের আর রাখি না।'

এ ছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে বেশ কিছু প্রক্রিয়াগত বিষয় আছে উল্লেখ করে ঢাবি উপাচার্য বলেন, 'কিছু কিছু ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স লাগে। সেগুলোও সহজ করতে হবে।'


সর্বশেষ সংবাদ