বিরল রোগে আক্রান্ত আশামনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়

আশামনি ওতার বাবা-মা
আশামনি ওতার বাবা-মা  © টিডিসি ফটো

চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া আশামনি (১০) জন্মের পর থেকেই বিরল এক চর্মরোগে আক্রান্ত। তার পুরো শরীরের চামড়ার উপর বিশেষ শক্ত আবরণের স্তর পড়ে গেছে। এমন যন্ত্রণা নিয়েই দিন পার করছে ছোট এই মেয়েটি।

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের মধুনাল গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তান আশামনি। তার বাবা আউলাদ হোসেন পেশায় একজন রিকশাচালক। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে আশামনি সবার বড়। বাবার বসতবাড়িটাই তাদের সম্বল।

আশামনির মা করুণা আক্তার বলেন, ১০ বছর আগে আশামনির জন্ম। জন্মের ১৫ দিন পরই তার পুরো শরীর লালচে হয়ে যায়। পরে শরীর থেকে পুরো চামড়া খসে পড়ে, আবার লালচে হয়, আবার খসে পড়ে। এভাবেই আশামনির বেড়ে ওঠা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চামড়ার আবরণের ধরন পরিবর্তন হতে থাকে। সারা শরীর জুড়ে পোড়া চামড়ার মতো মোটা হয়ে আছে। এই চামড়ার চুলকানির কারণে শরীরে ফুসকা পড়ে যায়। এটা এক অসহ্য যন্ত্রণা।

আশামনির বাবা আউলাদ হোসেন বলেন, রিকশা চালিয়ে কোনো রকম মেয়ের চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। কয়দিন পরপর তাকে রক্ত দিতে হয়। এরমধ্যে তাকে ২০ বার রক্ত দেওয়া হয়েছে। আমি নিজে অনেকবার মেয়েকে রক্ত দিয়েছি। ময়মনসিংহ হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু কোনো উন্নতি হচ্ছে না। মেয়ের চিকিৎসার টাকার জোগাড় করতে গিয়ে আমি নিজের রক্তও বিক্রি করেছি। কিন্তু এখন আর পারছি না।

তিনি আরও বলেন, মেয়ে বড় হচ্ছে এখন তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তাও বাড়ছে। চিকিৎসক বলছেন ‘ইত্তায়সিস’ নামে এক বিরল চর্মরোগে আক্রান্ত আশামনি। দেশের বাইরে (ভারত) নিয়ে চিকিৎসা করাতে পারলে হয়তো সে ভালো হবে। এতে অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু আমি তো গরিব, অসহায়। মেয়ের এমন দুঃসহ যন্ত্রণা লাঘবে কিছুই করতে পারছি না। সমাজের বিত্তবানরা যদি আমার মেয়ের পাশে দাঁড়ায় তাহলে আমি আমার মেয়েকে সুস্থ করে তুলতে পারবো।

অসুস্থ আশামনি বলে, সারা শরীর চুলকায়। এতে ফুসকা পড়ে যায়। ফলে অনেক যন্ত্রণা করে। আমি এই অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চাই। সবাই আমাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সহযোগিতা করুন।

মধুনাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শহীদ ফকির বলেন, আশামনি আমাদের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। সে বিরল চর্মরোগে আক্রান্ত হলেও লেখাপড়ায় খুব মনোযোগী। তার পরিবার খুবই দরিদ্র। তাই সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতায় মেয়েটির উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলে সে স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসতে পারবে।

পূর্বধলার আগিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সানোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, আশামনির বাবা-মা খুব দরিদ্র। মেয়ের এমন বিরল রোগের কারণে পরিবারটি কষ্টে আছে। মেয়েটির চিকিৎসার জন্য সমাজসেবা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, আশামনির শরীরে বিরল চর্মরোগের ব্যাপারে গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমি জেনেছি। আমি আজ অথবা কাল সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে আশামনির চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence