ডা. জোবাইদা রহমান কী রাজনীতিতে আসছেন, যা বললেন মির্জা ফখরুল
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৫, ০৬:৩৫ PM , আপডেট: ২১ জুন ২০২৫, ০২:১৪ PM
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। রাজধানীর ধানমণ্ডিতে তার বাবার বাড়ি ‘মাহবুব ভবন’-এ থাকবেন এ চিকিৎসক। রাজনীতিমহলে ইতিমধ্যে তাকে নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। তিনি কি রাজনীতিতে আসছেন নাকি তার পুরোনো চিকিৎসা পেশায় ফিরছেন?
এর আগে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এক সংকটময় ক্ষণে স্বামী তারেক রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে ঢাকা ত্যাগ করেছিলেন ডা. জোবাইদা। এরপর আর দেশে ফিরতে পারেননি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পটপরির্তনের পর আজ দেশে ফিরেছেন ডা. জোবাইদা রহমান।
রাজনীতি ডা. জোবাইদা রহমানের রক্তে আছে, পরিবারেও আছে। তার প্রয়াত বাবা রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মাহবুব আলী খান ১৯৭৮ সালের ৪ নভেম্বর থেকে ১৯৮৪ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের সময় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সরকারের অধীনে যোগাযোগ ও কৃষি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী ছিলেন জোবাইদার চাচা। তার বাবা-চাচা রাজনীতি করেছেন, বিভিন্ন সময় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এছাড়াও তার শ্বশুর পরিবারের সবাই যুক্ত রাজনীতির সঙ্গে। যার ফলে তিনিও রাজনীতিতে যুক্ত হবেন, এটা সবাই ভাবতেই পারে।
অনেকে বলছে, ডা. জোবাইদা রহমান পরিচ্ছন্ন ও মেধাবী ব্যক্তিত্ব। ১/১১-এর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি আইনি জটিলতার মুখোমুখি হন। ২০০৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কাফরুল থানায় তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান ও তার মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
পরে জোবাইদাকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন ঢাকার একটি আদালত। ২০২৪ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই সাজা ও জরিমানা স্থগিত করা হয়।
১৯৭২ সালের ১৮ মে সিলেটে জন্ম নেওয়া জোবাইদা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করার পর বাবা-মায়ের আগ্রহে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন।
জোবাইদা ১৯৯৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি সর্বোচ্চ মেধার সঙ্গে এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ১৯৯৫ সালে বিসিএসের মাধ্যমে সরকারি চিকিৎসক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। জোবাইদা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস-স্বাস্থ্য) পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।
২০০৮ সালে শিক্ষা ছুটিতে লন্ডনে যাওয়ার পর শেখ হাসিনার সরকার তাকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে। লন্ডনে যাওয়ার পর জোবাইদা ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
ডা. জোবাইদা রহমান রাজনীতিতে আসছেন কিনা তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তার পরিবার থেকে জানানো হয়নি। এ সম্পর্কে তিনিও মুখ খোলেননি। বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা চান, জোবাইদা রহমান রাজনীতিকে যুক্ত হোন। এতে বিএনপির মধ্যে আরও গতিশীলতা সৃষ্টি হবে। সারা দেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রাণ-চাঞ্জল্য তৈরি হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে এক সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয়, তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান নাকি রাজনীতিতে আসছেন? চারপাশে এমন আওয়াজ আছে। আপনার অভিমত কী?
মির্জা ফখরুল জবাবে বলেন, ‘এটা আওয়াজেই আছে। আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। মিডিয়া গসিপ করছে। এছাড়া আমার কাছে আর কোনো তথ্য নেই।’
অবশ্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডা. জোবাইদা রহমান রাজনীতি আসলে বিএনপির জন্য ভালো হবে। কেন্দ্রীয় নেতার অভাবে এতোদিন বিএনপির মধ্যে একটা নৈতিক শূন্যতা ছিল, সেটি তিনি অনেকাংশেই পূরণ করতে পারবেন। এতে দলটির নৈতিক শক্তি ও জনপ্রিয়তা বাড়বে।