যশোরে বিএনপিতে মনোনয়ন যুদ্ধ, জামায়াতের একক প্রার্থী
- হুমায়ন কবির মিরাজ, যশোর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৫, ০৮:০০ PM , আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫, ০৮:১৭ PM

যশোর-১ (শার্শা) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে পৌঁছেছে। যদিও নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেনি, তবুও বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নেমে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিএনপির অভ্যন্তরীণ মনোনয়ন যুদ্ধে চার নেতা একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তি। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী একক প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ এবং তাদের মিত্ররা মাঠে না থাকার কারণে, আগামী নির্বাচনে এই আসনে মূল লড়াই হবে বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যে।
এটি একটি ঐতিহাসিক আসন, যেখানে গত ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৭, বিএনপি ৩ এবং জামায়াত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১ বার করে জয়ী হয়েছেন। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দখলে ছিল এই আসন, তবে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, আগামী নির্বাচনটি চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতের জন্য।
বর্তমানে যশোর-১ (শার্শা) আসনে মোট ২ লাখ ৯৪ হাজার ৬৯২ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৬, মহিলা ভোটার ১ লাখ ৪৭ হাজার ১১৪ এবং হিজড়া ভোটার ২ জন। তবে, ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে এখানে রাজনৈতিক সমীকরণ অনেকটা বদলে গেছে। জামায়াত ও বিএনপি তাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করার জন্য মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে।
বিএনপির প্রধান মনোনয়নপ্রার্থী মফিকুল হাসান তৃপ্তি, যিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন, তিনি আবারও ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে চান। তবে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছেন শার্শা উপজেলা বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা খায়রুজ্জামান মধু, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির এবং সাধারণ সম্পাদক নূরুজ্জামান লিটন। এ চার নেতা বর্তমানে দলের মনোনয়ন লাভের জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জনগণের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরছেন।
বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। বিশেষত, ৫ আগস্টের পর দলের মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যা দলের জন্য অশনি সংকেত হতে পারে।
যশোর-১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা আজিজুর রহমান ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হওয়ার পর এবার আবারও নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সাড়ে ১৫ বছর সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে না পারলেও, আমাদের কার্যক্রম নিরবে চলেছে। এবার আমরা জনগণের কাছ থেকে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি এবং জামায়াতের প্রতি মানুষের সমর্থন বাড়ছে। তারা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ চায়।
এই পরিস্থিতিতে, যশোর-১ আসনে নির্বাচন আগামীতে একটি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার জায়গা হয়ে উঠতে পারে, যেখানে বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন।