গরু-চিতা বাঘ সখ্যতার ঘটনাটি আসাম নয় গুজরাটের
- টিডিসি ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:২১ PM , আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৫৯ AM
গতকাল সোমবার কাঠগোলাপ নামের একটি ফেসবুক পেজের একটি পোস্টে বলা হয়, একটি গরুর কাছে প্রতি রাতে আসে চিতা বাঘটি। পোস্টে বিরল এই ঘটনাটি ভারতের আসামের বলে দাবি করা হয়। বাংলাদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকেই একই পোস্ট কপি করে শেয়ার করেছেন। দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস ফ্যাক্টচেকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঘটনাটি ভারতের আসামের নয়, গুজরাটের আন্তোলি গ্রামের। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ায় ২০০২ সালের ২৫ অক্টোবর এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, গুজরাটের আন্তোলি গ্রামে এমন বিরল দৃশ্য দেখা গেছে।
বাংলাদেশের ফেসবুক পোস্টগুলোতে বলা হয়, ‘ঘটনাটি আসামের। একজন লোক গরুটি কিনে এনে তার উঠুনে বেঁধে রাখে। কিন্তু প্রত্যেক গভীর রাতে কুকুরের খুব ঘেউ ঘেউ ডাকাডাকি শুনতে পায়। তারা ভাবল এই লকডাউনের সময়ে হয়তো চোরের উৎপাত বেড়েছে। তাই তারা সেখানে সিসিটিভি সেট করে। পরের দিন সিসিটিভি ফুটেজ দেখেতো সবাই হতবাক, গরুটির পাশে একটা চিতা ঘুর ঘুর করছে।
পরে তারা যার কাছ থেকে গরুটি কিনেছিল তার কাছে যায় ব্যাপারটা জানতে। আর জানতে পারে যে এই চিতাবাঘটির জন্মের ২০ দিন বয়সে তার মা চিতা বাঘিনী মারা যায়। তারপরে এই গরুটির দুগ্ধপান করে সে বাঁচে। তাই সে তার ত্রাণকর্ত্রী দুধমাকে ভুলে যায়নি, প্রত্যেক রাত্রে দেখা করতে আসে। মাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকে। মাও আদর করে।’
রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা গেছে, অন ফরেস্ট নামের একটি ওয়েবসাইটে ২০১৪ সালের ৬ এপ্রিল ‘স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশন- এ লিওপার্ড এন্ড মাদারলি কাউ’ শিরোনামে একটি লেখায় ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিগুলো রয়েছে।
অন ফরেস্টের লেখায় বলা হয়, ২০০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাত ২টায় ছবিগুলো তোলা। বন বিভাগের কর্মকর্তা, গবেষক ও বেশ কয়েকজন পরিবেশকর্মী ওই গ্রামে গিয়ে কয়েকদিন অবস্থানের পর মধ্যরাতে চিতাবাঘের আগমন ঘটে।
ফেসবুক পোস্টের বর্ণনায় সিসিটিভি ফুটেজের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে তেমন বর্ণনা কোথাও পাওয়া যায়নি।
অন্য দিকে, ২০০৮ সালে ইউটিউবে ‘চিতাবাঘের ভালবাসার গল্প’ শিরোনামে এ নিয়ে ভারতের জি নিউজের একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে অবশ্য দাবি করা হয়, জি নিউজের ক্যামেরায় চিতা বাঘ ও গরুর সখ্যতার দৃশ্য ধরা পড়েছে।
এ ছাড়া এই ছবির সঙ্গে বিভিন্ন বক্তব্যজুড়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টের পর ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার দুটি ফ্যাক্টচেকিং সাইটে এ নিয়ে স্টোরি প্রকাশিত হয়।