দু’বার বিসিএস, সাব-রেজিস্ট্রার, এডিসহ প্রথম সারির কয়েকটি চাকরি পেয়েছিলেন পলাশ, কেন ‘আত্মহত্যা’?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৫, ০৬:৩৯ PM , আপডেট: ২১ জুন ২০২৫, ০২:০৬ PM

পারিবারিক কলহের জেরে চট্টগ্রামে পলাশ সাহা নামে এক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নিজের ব্যবহৃত পিস্তল দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। আজ বুধবার (৭ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর চান্দগাঁওয়ে র্যাব-৭-এর কার্যালয়ের তৃতীয় তলা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে।
ওই চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দায়ী না। আমিই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের উপর। তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা আছে তা মায়ের জন্য। দিদি যেন সব কো-অর্ডিনেট করে।’
জানা গেছে, পলাশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ৩৭তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডার এবং ৩৬তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত ছিলেন। এছাড়াও সাবরেজিস্টার, এডিসহ ১ম শ্রেণির কয়েকটি চাকরিতে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন তিনি।
এএসপি পলাশ সাহার মেঝ ভাই নন্দ লাল সাহা বলেন, ২ বছর আগে ফরিদপুরে চৌধুরীপাড়ায় পলাশের বিবাহ হয়। বিয়ের ৬/৭মাস পর থেকেই পরিবারে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। প্রতিদিন কিছু না কিছু নিয়ে পলাশের স্ত্রী সুস্মিতা সাহা পরিবারে ঝামেলা করতো। আমার মা আরতি সাহা পলাশের সাথে চট্রগ্রামে থাকতো এটা পলাশের স্ত্রী মেনে নিতে পারতো না। সে সব সময় মাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য পলাশকে চাপ প্রয়োগ করতো। পলাশ কিছুতেই মাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে চাইতো না। সে মা ও তার স্ত্রী দু’জনকেই ভালোবাসতো।
তিনি বলেন, বুধবার সকালে সামান্য বিষয় নিয়ে আমার মা আরতি সাহা ও ভাই পলাশ সাহার গায়ে হাত তোলে সুস্মিতা সাহা। এটা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেনি আমার ভাই। আর এ কারণেই আমার ভাই পলাশ সাহা আত্মহত্যা করেছে বলে আমাদের ধারণা।
পলাশের মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন অনেকে। প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরি করেও কীসের অভাব ছিল তার। জীবন মিয়া নামে একজন লিখেছেন, পরিবার কেন মানুষকে এত অসহায় করে দেয়? সাবরেজিস্টার, এডি, এএসপি সহ অনেক গুলো ১ম শ্রেণীর চাকরিও পেয়েছিলেন। কোন কিছুর অভাব ছিল না। কিন্তু নিজের ইস্যু করা পিস্তল নিজের উপর চালিয়ে বিদায় নিয়েছেন। হায়রে পারিবার!
নাঈম নির্ঝর নামে একজন লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগের ছোট ভাই এএসপি পলাশ। অনেক মেধাবী একটা ছেলে। কয়েকটা ১ম শ্রেণীর জবে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছিল, ঘরে পারেনি। হায় স্বর্ণ!