রাখাল রাহাকে এনসিটিবির কারিকুলাম কমিটি থেকে অপসরণসহ ৮ দফা দাবি

সংবাদ সম্মেলন
সংবাদ সম্মেলন   © টিডিসি ফটো

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটির সদস্য রাখাল রাহা ওরফে সাজ্জাদুর রহমানকে এনসিটিবির সব কমিটি থেকে অপসারণসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে ‘সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠন। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে আট দফা দাবি তুলে ধরা হয়।  

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জাহাঙ্গীর কবির। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যখন সব নাগরিক সমস্যা মোকাবিলায় দলমতের ঊর্ধ্বে এসে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন, তখন দেশের কিছু মহল জনগণের মাঝে ঘৃণা ও বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করছি, এখনও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফ্যাসিবাদের দোসররা স্বক্রিয় এবং নানা যড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। 

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি সর্বোপরি তোষামোদিতে ব্যতিব্যস্ত থাকায় যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে জুলাই বিপ্লব সংগঠিত হয়েছিল, তা বহুলাংশে ব্যর্থ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করছি, ক্ষমতার পট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে অভ্যুত্থান পরবর্তী যারা বিভিন্ন দায়িত্বে আসীন হয়েছেন, তারাও জনগণের প্রত্যাশাকে অবমূল্যায়ন করে ফ্যাসিবাদী কায়দায় নিজেদের স্বার্থ হাসিলে মত্ত হচ্ছেন। যে যেভাবে পারছে সে সেভাবেই ক্ষমতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে অন্যদের ওপর নির্লিপ্ত রেজিম চালিয়ে নিজে অপরাধের দুর্গ গড়ে তুলছে।

তাদের আট দফা দাবি হলো- রাখাল রাহাকে এনসিটিবির সব কমিটি থেকে অপসারণ করে গণমাধ্যমে স্পষ্ট বিবৃতি দিতে হবে এবং তাকে হিরো বানিয়ে ভবিষ্যতে কোনোরূপ পুনর্বহাল করা যাবে না এবং তার মতো বিতর্কিত কাউকেই এনসিটিবির পরিমার্জন বা সংস্কার কমিটিতে যুক্ত করা যাবে না। যেহেতু মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এবং কোর্ট থেকে আদেশ জারি হয়েছে, তাই শর্ত ও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, আমাদের জব্দকৃত সব মালামাল, সবার ফেসবুক আইডি এবং গ্রুপগুলো ফেরত দিতে হবে।

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অবিলম্বে মামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জনে কোন কোন বিশেষজ্ঞ কোন কোন বিষয় পরিমার্জন করেছে, কত টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছে তার দালিলিক প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে। পাঠ্যপুস্তক মূদ্রণে ২০২৩ সালে যেখানে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ৭ শতাংশ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাইনাস ভেরিয়েশনে কাজ পেলেও এবার কেনো ২০৭ শতাংশ বাড়িয়ে প্রাক্কলিত দর করে আরো ২০-২১৭ শতাংশ গড়ে অর্থাৎ ৪১ শতাংশ ওভার প্রাইসিং রেটে প্রেসগুলিকে কাজ দিয়েছে এবং এনসিটিবির সিন্ডিকেট কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে বলে অভিযোগ এসেছে তার তদন্ত করতে হবে।

পত্রিকায় এসেছে ৪০টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান সিঙ্গেল বিডার হওয়ার পরও তাদের কোনোরূপ কম্পিটিশন না করিয়ে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ তাদের কাজ দিয়ে সরকারের বিপুল অর্থের ক্ষতি করেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। অবিলম্বে শিক্ষা কমিশন গঠন করে যুগোপযোগী শিক্ষা নীতি এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও দেশীয় মূল্যবোধের আলোকে কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে। ইউনেস্কোর পরামর্শ, দেশের মোট জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ