এভারেস্টের সর্বোচ্চ হিমবাহ সম্পূর্ণ গলে যেতে পারে এই শতাব্দিতে

বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট।
বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট।  © সংগৃহীত

এভারেস্টের চূড়ার দুই হাজার বছরের পুরোনো হিমবাহ এই শতাব্দির মাঝামাঝিতে সম্পূর্ণ গলে যেতে পারে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। এতে এভারেস্টের  উচ্চতা কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নেপালের গবেষকরা।

সম্প্রতি নেপাল ভিত্তিক দি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেইন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি) সংস্থা এ আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির। দি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেইন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি)

নেপালের গবেষকরা তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, গত শতাব্দির শেষ ভাগ থেকেই এভারেস্টের বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে। দক্ষিণের ঠাণ্ডা হিমবাহ হচ্ছে হিমালয়ের অন্যতম পুরোনো হিমবাহ। এভারেস্টের নেপালের অংশে এ হিমবাহের অবস্থান। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮ হাজার ২০ মিটার উচ্চতায় থাকা এ হিমবাহ প্রতিবছর প্রায় দুই মিটার করে গলে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি উপাচার্যের বিষয়টি রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করব: শিক্ষামন্ত্রী

নেপালের ১৭ জনসহ আটটি দেশের গবেষকদের নিয়ে গঠিত একটি দল এ গবেষণায় যুক্ত ছিল। গবেষণা প্রতিবেদনটি নেচার পোর্টফোলিও জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রেডিওকার্বন পদ্ধতিতে গবেষকরা দক্ষিণের ঠাণ্ডা হিমবাহের বয়স সম্পর্কে অনুমান করেছেন। দেখা গেছে, এটি প্রায় দুই হাজার বছর পুরনো।

এক বিবৃতিতে আইসিআইএমওডির গবেষকেরা সতর্ক করে বলেন, যতটা সময় নিয়ে এ হিমবাহ তৈরি হয়েছে, তার চেয়ে ৮০ গুণ দ্রুততার সঙ্গে এটি গলতে শুরু করেছে। ফলে এই শতাব্দির মাঝামাঝিতে এটি পুরোপুরি গলে যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনসহ মনুষ্যসৃষ্ট কারণই এর জন্য দায়ী। এ আশঙ্কা হিমালয়কে ঘিরে থাকা এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্ক বাড়িয়েছে। কেননা এ অঞ্চলের শত কোটি মানুষের জীবনযাত্রা, সুপেয় পানি, খাবার ও জীবিকা হিমালয় থেকে নেমে আসা নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল।

আরও পড়ুন: প্রকল্প জটিলতায় ১৯ মাস বেতন নেই পৌনে ৮শ’ শিক্ষকের

এর আগে এভারেস্টের হিমবাহ দ্রুত গলে যাওয়া নিয়ে সতর্ক করে দেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মেইনের একদল বিজ্ঞানী ও পর্বতারোহী। নেচার পরিচালিত সাময়িকী ক্লাইমেট অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক সায়েন্সে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এভারেস্টের হিমবাহ তুষার দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। এই হিমবাহ গঠিত হতে লাগে কয়েক দশক। কিন্তু বরফ আলগা হয়ে পড়ায় সেই হিমবাহ প্রতিবছর গলছে দ্রুত হারে। এভারেস্টের হিমবাহ গঠিত হতে কমবেশি দুই হাজার বছর লেগেছে। কিন্তু সেটা গলতে লাগছে মাত্র ২৫ বছর।

গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী ইউনিভার্সিটি অব মেইনের ক্লাইমেট চেঞ্জ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক পল মায়েস্কি বলেন, এভারেস্টের সর্বোচ্চ হিমবাহটি এর ভারসাম্য রক্ষায় রক্ষাকর্তা হিসেবে কাজ করে। এখন দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর ছাদেও জলবায়ু পরিবর্তন ও মনুষ্যসৃষ্ট উষ্ণতার প্রভাব পড়েছে।