মিয়ানমারে গুলিতে একদিনে প্রাণ গেল ৩৮ জনের

মিয়ানমারে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ
মিয়ানমারে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ  © বিবিসি

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রতিবাদ বিক্ষোভে একদিনে সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। রবিবার (১৪ মার্চ) দেশটিতে বিক্ষোভ করার সময় অন্তত ৩৮ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। দেশটির সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। বিক্ষোভকারীরাও লাঠি এবং ছুরি নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরুর পর এ পর্যন্ত অন্তত ১২০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে ইয়াঙ্গুন শহরেই অন্তত ২১জন বিক্ষোভকারী প্রাণ হারিয়েছেন। অন্যরা মারা গেছেন দেশটির অন্যান্য শহরে। গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান করার পর থেকেই মিয়ানমার দেশটির সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দেশটির বেসামরিক নেত্রী এবং ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দলের প্রধান অং সান সু চিকে আটক করে রেখেছে সামরিক জান্তা। খবর: বিবিসি।

গত নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক বিজয় পায় এনএলডি। তবে সামরিক বাহিনীর দাবি, ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া বেশ কয়েকজন এমপি গত মাসের সামরিক অভ্যুত্থান মেনে নেননি। তারা লুকিয়ে নিজেদের মিয়ানমারের বৈধ সরকার বলে দাবি করেছেন। লুকিয়ে থাকা রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটির প্রধান মাহন উইন খিয়াং থান প্রথম বার্তায় বিক্ষোভকারীদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন, যাকে তিনি ‘বিপ্লব’ বলে বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘এটা জাতির জন্য সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন মুহূর্ত। তবে খুব তাড়াতাড়ি আলোর দেখা পাওয়া যাবে। জনগণের বিজয় হবেই।’ পর্যবেক্ষক গ্রুপ অ্যাসিট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স’র তথ্য অনুযায়ী, রবিবার মিয়ানমারে মোট ৩৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, ইয়াঙ্গুনে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ আরও অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।

ইয়াঙ্গনের হ্লাইং থারাইয়ার এলাকায় অনেক কারখানা রয়েছে যেগুলো চীনা বিনিয়োগে তৈরি। চীনা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এখানে চীনা কারখানাগুলো বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে, তাদের নিরাপত্তা প্রয়োজন। জান্তা সরকার এরপর ওই এলাকায় সামরিক আইন জারি করে।

বেইজিং বলছে, বিক্ষোভকারীরা রড, কুঠার এবং পেট্রোল নিয়ে আক্রমণ চালিয়ে অন্তত দশটি কারখানার ক্ষতিসাধন করেছে। এগুলো মূলত তৈরি পোশাকের কারখানা কিংবা গুদাম। একটি চীনা হোটেলও হামলার লক্ষ্যে পরিণত হয়। মিয়ানমারের চীন দূতাবাস তাদের ফেসবুক পাতায় লিখেছে, কারখানাগুলোতে লুটপাট হয়েছে, ক্ষতিসাধন করা হয়েছে, বহু চীনা কর্মী আহত হয়েছে এবং তারা আটকে পড়েছে।

ওই এলাকায় দিনভর গুলির শব্দ শোনা যায়। রাস্তায় দেখা গেছে সেনাবাহিনীর ট্রাক। এসময় বিক্ষোভকারীরা বালির বস্তা, টায়ার এবং কাঁটাতার দিয়ে অবরোধ তৈরি করে। কিছু বিক্ষোভকারীকে দেখা যায় অস্থায়ী ঢাল তৈরি করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে আহতদের উদ্ধার করার জন্য। বার্তা সংস্থা এএফপিকে একজন স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, ‘আমার চোখের সামনেই তিনজন আহত ব্যক্তি মারা গেছে’। এদিকে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, পুলিশের একজন সদস্যও সেখানে নিহত হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence